বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় ও সম্মানজনক পুরস্কার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’। ১৯৭৫ সাল থেকে প্রতি বছরই দেয়া হচ্ছে এই পুরস্কার। চলতি বছরে দেয়া হবে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’। আগামী ৮ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বসছে এবারের আসরটি। এদিন অভিনয় ও সঙ্গীত জগতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।
এ বছরও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিল্পী ও কলাকুশলীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (চলচ্চিত্র) শাহিন আরা বেগম। সরকার এ বছর বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পে অবদানের জন্য ২৬টি বিভাগে ২৯ জন ব্যক্তিকে পুরস্কার দিচ্ছে।
গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’-এর বিজয়ীদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করে। সেই গেজেট থেকে জানা যায়, এ বছর সেরা অভিনেতার পুরস্কার পাচ্ছেন দেশসেরা অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আয়নাবাজি’ ছবিতে একাই সাতটি চরিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, সেরা অভিনেত্রী হিসেবে যৌথভাবে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ পাচ্ছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা ও কুসুম শিকদার। ‘অস্তিত্ব’ ছবিতে তিশার অভিনয় ছিল নজরকাড়া। ‘শঙ্খচিল’ ছবিতে কুসুম শিকদার ছিলেন অনবদ্য। এ দুটি ছবির জন্যই সেরা অভিনেত্রীর তকমা পেয়েছেন তারা।
এদিকে, সেরা গায়কের পুরস্কার পাচ্ছেন ওয়াকিল আহমেদ। ‘দর্পণ বিসর্জন’ ছবিতে তার গাওয়া ‘অমৃত মেঘের বারী’ গানটি ছিল অসাধারণ। আর সেরা গায়িকার পুরস্কারটি বাগিয়ে নিয়েছেন মেহের আফরোজ শাওন। শাওনের প্রয়াত স্বামী প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘কৃষ্ণপক্ষ’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত একই নামের ছবিটিতে তার গাওয়া ‘যদি মন কাঁদে’ গানটি হৃদয় ছুঁয়েছিল দর্শকদের। ছবিটি পরিচালনাও করেন শাওন।
এছাড়া এ বছর আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান দুই অভিনয়শিল্পী নায়ক ফারুক ও নায়িকা ববিতা। বাংলা চলচ্চিত্রে তাদের দুজনেরই অসামান্য অবদান রয়েছে। বর্তমানে অভিনয়ে দেখা না গেলেও বিভিন্ন কাজেকর্মে তারা বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্গেই রয়েছেন।
এ বছর আরও যারা পুরস্কার পাচ্ছেন
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ‘ঘ্রাণ’, প্রযোজক এস এম কামরুল আহসান।
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: ‘জন্মসাথী’, প্রযোজক একাত্তর মিডিয়া লি. ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
শ্রেষ্ঠ পরিচালক: অমিতাভ রেজা চৌধুরী, ‘আয়নাবাজি’।
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম, ছবি- ‘আয়নাবাজি’।
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: ইকবাল আহসানুল কবির, ছবি- ‘আয়নাবাজি’।
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: রাশেদ জামান, ছবি- ‘আয়নাবাজি’।
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ, ছবি- ‘আয়নাবাজি’।
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-অভিনেতা: যৌথভাবে আলীরাজ, ছবি- ‘পুড়ে যায় মন’ ও ফজলুর রহমান বাবু, ছবি- ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’।
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-অভিনেত্রী: তানিয়া আহমেদ, ‘কৃষ্ণপক্ষ’।
শ্রেষ্ঠ খল-অভিনেতা: শহীদুজ্জামান সেলিম, ছবি- ‘অজ্ঞাতনামা’।
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: তৌকীর আহমেদ, ছবি- ‘অজ্ঞাতনামা’।
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: আনুম রহমান খান সাঁঝবাতি, ছবি- ‘শঙ্খচিল’।
শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক: ইমন সাহা, ছবি- ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’।
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ছবি- ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’, গান- ‘বিধিরে ও বিধি’।
শ্রেষ্ঠ সুরকার : ইমন সাহা, গান- ‘বিধিরে ও বিধি’, ছবি- ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’।
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: রুবাইয়াত হোসেন, ছবি- ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’।
শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক: উত্তম গুহ, ছবি- ‘শঙ্খচিল’।
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: যৌথভাবে সাত্তার, নিয়তি ও ফারজানা সান, ছবি- ‘আয়নাবাজি’।
শ্রেষ্ঠ মেকাপম্যান: মানিক, ছবি- ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’।