অনলাইন ডেস্ক: বুদ্ধিমত্তার দাপটে এখন এমন ভিডিও বানানো সম্ভব, যেটা দেখে আসল আর নকল আলাদা করা সত্যিই কঠিন। বিশেষ করে ডিপফেক ভিডিও যেখানে কারো মুখ, কণ্ঠ বা পুরো পরিবেশ পর্যন্ত বদলে ফেলা যায়। ফলাফল? মানুষ বিভ্রান্ত হয়, ভুয়া খবর ছড়ায়, আর ব্যক্তিগত মানহানি পর্যন্ত ঘটে। তবে একটু খেয়াল করলেই অনেক সময় বোঝা যায় ভিডিওটি আসল নাকি এআইয়ের বানানো। আসুন জেনে নেই কিভাবে এআই ভিডিও চিহ্নিত করতে পারবেন-
মুখের অভিব্যক্তি ও লিপ-সিঙ্কে অস্বাভাবিকতা
এআই-জেনারেটেড ভিডিওতে মুখের নড়াচড়া স্বাভাবিক হলেও ঠোঁটের সঙ্গে কথার মিল অনেক সময় পুরোপুরি ঠিক থাকে না। হাসার সময় চোখের কোণে ভাঁজ না পড়া, মুখের মাংসপেশির অস্বাভাবিক নড়াচড়া, অথবা কথার সময় মুখের ফ্রেম আলাদা মনে হওয়া এসবই ডিপফেকের লক্ষণ হতে পারে।
চোখের নড়াচড়ায় সমস্যা
মানুষ স্বাভাবিকভাবে পলক ফেলে, চোখ ঘোরায়, কখনো বড় করে তোলে আবার কখনো ছোট করে। কিন্তু এআই জেনারেটেড ভিডিওতে চোখ অনেক সময় একই দিকে তাকিয়ে থাকে, পলক কম পরে বা অস্বাভাবিকভাবে পরপর পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘অন্যরকম’ চোখের নড়াচড়া ডিপফেক ধরার অন্যতম সহজ উপায়।
আলো আর ছায়ার অসামঞ্জস্যতা
আসল ভিডিওতে আলোর উৎস, দিক ও তীব্রতা একরকম থাকে। কিন্তু নকল ভিডিওতে মুখে বা দেহে আলো-ছায়া অস্বাভাবিক দেখায়। মুখের ওপর আলো পড়ছে বাম দিক দিয়ে, কিন্তু ঘাড় বা শরীরে তা ডান দিক থেকে আসছে এমন অসামঞ্জস্যতা ভিডিওটি এআই দিয়ে বানানো হওয়ার ইঙ্গিত।
অডিও কোয়ালিটিতে সমস্যা
ডিপফেক ভিডিওতে কণ্ঠস্বর অনেক সময় কৃত্রিম শোনায়। শব্দ একটু রোবোটিক হয়, স্বরলয়ের ওঠানামা স্বাভাবিক নয়, আর শব্দের টোন দ্রুত পরিবর্তন হয়। অনেক সময় ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড বাস্তব পরিবেশের সঙ্গে মিল খায় না যেটা ভুয়া ভিডিওর আরেকটি চিহ্ন।
শরীরের ভঙ্গি ও অঙ্গভঙ্গিতে অদ্ভুতপনা
কারও মাথা, হাত বা কাঁধের নড়াচড়ায় আপাতদৃষ্টিতে অস্বাভাবিকতা থাকলে সেটি এআই জেনারেটেড হতে পারে। কখনো দেখা যায় মুখের অভিব্যক্তি আর শরীরের অঙ্গভঙ্গির সাথে মিল নেই-মুখ হাসছে কিন্তু শরীর স্থির, বা শরীর নড়ছে কিন্তু মুখ অবিকল একই রকম।
ব্যাকগ্রাউন্ডে বিকৃতি বা অদ্ভুত প্যাটার্ন
এআই ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেক সময় ঝাপসা অংশ দেখা যায়, কিছু অবজেক্ট অদ্ভুতভাবে মোচড়ানো থাকে বা মানুষের ছায়া স্পষ্ট হয় না। বিশেষ করে চুল, গয়না, গ্লাস এসব জায়গায় বিকৃতি সাধারণত বেশি দেখা যায়।
ভিডিওর মেটাডেটা পরীক্ষা
ভিডিওটি ডাউনলোড করে মেটাডাটা চেক করলে অনেক সময় সফটওয়্যার বা মডেলের তথ্য দেখা যায়। যদি এডিটিং সফটওয়্যার বা জেনারেটিভ টুলের নাম পাওয়া যায়, তাহলে সন্দেহ হওয়াই উচিত। যদিও অনেক সময় নির্মাতারা মেটাডাটা মুছে ফেলেও দেয়।
ভিডিও সোর্স যাচাই করা
ভিডিওটি কোথা থেকে এসেছে তা জানা খুব জরুরি। অচেনা পেজ, ফেক অ্যাকাউন্ট বা সন্দেহজনক ওয়েবসাইট থেকে আসা ভিডিও হলে তা যাচাই না করা পর্যন্ত বিশ্বাস করা ঠিক নয়। একই ভিডিও অন্য নির্ভরযোগ্য মিডিয়াতে পাওয়া যায় কি না সেটাও দেখতে হবে।
রিভার্স ভিডিও সার্চ ব্যবহার করা
গুগল বা বিশেষ এআই-ডিটেকশন টুল দিয়ে ভিডিওর একটি ফ্রেম সার্চ দিলে বোঝা যায় এটি আগে কোথায় ব্যবহার হয়েছে। যদি অন্য কোনো ভিন্ন ঘটনাতে একই ফ্রেম পাওয়া যায়, তাহলে এটি নিঃসন্দেহে নকল।
এআই ডিটেকশন টুল ব্যবহার করা
এখন অনেক অনলাইন টুল রয়েছে যা ভিডিও বিশ্লেষণ করে বলে দেয় সেটি ডিপফেক কিনা। যেমন- ডিপওয়্যার স্ক্যানার, হাইভ মোডারেশন, ইনটেল ফেকক্যাচার ইত্যাদি। এগুলো ভিডিওর ফ্রেম, মুখের নড়াচড়া এবং ভিজ্যুয়াল সিগন্যাল বিশ্লেষণ করে ফল দেয়।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
প্রকাশক: ফয়সাল আহাম্মেদ খান, সম্পাদক : জীবন খান, উপদেষ্টা : ডি আই জি আনোয়ার (অব:), মোহাম্মদ আমিমুল এহসান খান, আইন উপদেষ্টা : ফেরদৌস কবির খান, বার্তা সম্পাদক: মোরশেদ আলম পাটোয়ারী, সিনিয়র সহ-সম্পাদক: সজীব হোসেন (জয়), সহকারি সম্পাদক: মোঃ জিল্লুর রহমান খান, সহকারি সম্পাদক: মোঃ ইমরান হোসেন, নির্বাহী সম্পাদক : মতিউর রহমান (জনি), মফস্বল সম্পাদক: সঞ্জয় তালুকদার, এহতেশামুল হক (মাশুক), ক্রীড়া সম্পাদক : মোকাদ্দাস মোল্লা।
২৮/সি/৪ শাকের প্লাজা (টয়েনবি রোড) মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। মোবাইল : ০১৭১৪-০২২৮৭৭, E-mail : jibonnews24@gmail.com
জীবন নিউজ ২৪ ডট কম লিমিটেড