তিনবার দরপত্র আহ্বান করেও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ২২টি হাটের মধ্যে সাতটি অস্থায়ী পশুর হাটের দরপত্র পায়নি। দরপত্র পাওয়া হাটগুলোতে প্রস্তুতি চললেও অন্যান্য হাটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবে একটি মহল দরপত্র না হাওয়া হাটগুলোতে খাস আদায়ের মাধ্যমে পশুর হাট বসানোর চেষ্টা করছে। তবে এতে সিটি করপোরেশন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিটি করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যেসব হাট নিয়ে প্রতিবছর ইজারাদারদের কাড়াকাড়ি শুরু হতো, এবছর সেসব হাট কেউ নিতে চায় না। যারা নিতে চায় তারাও ন্যায্য মূল্যের দরপত্র দিচ্ছে না। ফলে সংস্থার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না।
দফায় দফায় টেন্ডার আহ্বান করেও কাঙ্ক্ষিত দর মেলেনি রাজধানীর হাটগুলোতে। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় সব কয়টি হাটেরই দর কম পড়েছে। বরাবরের মতো এবারো ইজারা সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে সিটি করপোরেশন অনেকটা বাধ্য হয়েই কম দরে হাট ইজারা দিচ্ছে। ফলে দুই সিটি করপোরেশন গত বছরের তুলনায় কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকা রাজস্ব হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। এবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩টি অস্থায়ী হাটের ইজারামূল্য ধরা হয়েছে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬৭৫ টাকা এবং ডিএনসিসির ৭টি পশুর হাটের সরকারি ইজারামূল্য ধরা হয়েছে ১২ কোটি ৮৫ লাখ ৫৩ হাজার ৭৭ টাকা। গতবছর ডিএসসিসি অস্থায়ী পশুর হাট বাবদ রাজস্ব আয় ধরা হয়েছিল ১০ কোটি এক লাখ টাকা। আদায় হয় সাত কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তবে চলতি অর্থবছরে (২০১৮-১৯) অর্থবছরে হাট বাবদ রাজস্ব আয় আট কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত সংস্থাটির সাতটি হাট থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে মাত্র তিন কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
অভিযোগ আছে, সাধারণ ব্যবসায়ীরা টেন্ডার প্রক্রিয়ার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারেনি। ফলে সাতটি হাটে দরপত্র পাওয়া যায়নি। ঈদের আগমুহূর্তে হাটগুলো সিটি করপোরেশন থেকে খাস আদায়ের অনুমোদন নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছেন একটি মহল।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, এবছর রাজধানীতে দুই সিটি করপোরেশন ২২টি হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে ডিএসসিসি ১৩টি ও ডিএনসিসি ৯টি স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে। ডিএসসিসি ১৩টি হাটের ইজারা আহ্বান করলেও সাতটি হাটের ইজারা চূড়ান্ত হয়েছে। এদিকে ডিএনসিসিরও নয়টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে একটির দরপত্র পাওয়া যায়নি।
সূত্র জানায়, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দরপত্র জমা না পড়া হাটগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বালুর মাঠসংলগ্ন (গোপীবাগ-কমলাপুর) খালি জায়গা ও কমলাপুর স্টেডিয়ামের রাস্তার পূর্ব পাশে খালি জায়গা, আরমানিটোলা খেলার মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলার ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা ও সাদেক হোসেন খোকা মাঠের পাশে ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনালসংলগ্ন খালি জায়গা। অন্যদিকে, উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় উত্তর খান হাটটির ইজারা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা যায়।
ডিএসসির দরপত্র চূড়ান্ত হওয়া অন্যান্য হাটের মধ্যে রয়েছে মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা, ঝিগাতলার হাজারীবাগ মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠসংলগ্ন খালি জায়গা, কামরাঙ্গীর চর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন খালি জায়গা, পোস্তাগোলা শ্মশানঘাটসংলগ্ন খালি জায়গা ও শ্যামপুরসংলগ্ন খালি জায়গা।
রাজধানীর বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে, দরপত্র পাওয়া হাটগুলোর প্রস্তুতি চলছে। তবে দরপত্র না পাওয়া হাটগুলোর মধ্যে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বালুর মাঠসংলগ্ন (গোপীবাগ-কমলাপুর) খালি জায়গা ও কমলাপুর স্টেডিয়ামের রাস্তার পূর্ব পাশে খালি জায়গা ঘুরে দেখা গেছে, চলছে হাটের প্রস্তুতি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল জানান, আমরা এরই মধ্যে সাতটি হাটের ইজারাপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। ঈদের দিনসহ চার দিনের জন্য হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়। যারা হাটের অনুমোদন পেয়েছে, তারা ঈদের ছয়-সাত দিন আগে হাট প্রস্তুতির কাজ শুরু করতে পারে। তবে যেসব হাটগুলোতে দরপত্র পাওয়া যায়নি সেগুলোতে তো কেউ কাজ শুরু করতে পারে না।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
সম্পাদক : জীবন খান, উপদেষ্টা : ডি আই জি আনোয়ার (অব:) , মোহাম্মদ আমিমুল এহসান খান, আইন উপদেষ্টা : ফেরদৌস কবির খান, সহকারি সম্পাদক: মোঃ জিল্লুর রহমান খান, নির্বাহী সম্পাদক : মতিউর রহমান ( জনি), সিনিয়র সহ-সম্পাদক: সজীব হোসেন (জয়), মফস্বল সম্পাদক: এহতেশামুল হক (মাশুক)।
চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, টিকাটুলী, ঢাকা-১২০৩। মোবাইল : ০১৭১৪-০২২৮৭৭, E-mail : jibonnews24@gmail.com
জীবন নিউজ ২৪ ডট কম