বিশেষ প্রতিনিধি: ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির প্রথম দিন কমলাপুর স্টেশনে টিকেট প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। অন্যান্য বছর ঈদের টিকেট বিক্রির প্রথম দুই দিন তেমন একটা ভিড় থাকে না। ঈদের সরকারি ছুটি শুরুর আগের দিনের টিকেটের চাহিদা বেশি থাকে বলে ভিড়ের চাপ বেশি থাকে টিকেট বিক্রি শুরুর তৃতীয় দিন থেকে। তবে গতকাল বুধবার বিভিন্ন রুটের ট্রেনের টিকেটের জন্য আগের রাত থেকেই ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টারে অপেক্ষায় ছিলেন টিকেট প্রত্যাশীরা। সকাল ৮টায় কাউন্টার খোলার সময় লাইন দেখা যায় স্টেশনের মূল ফটক পর্যন্ত। সূচি অনুযায়ী গতকাল বুধবার বিক্রি হয়েছে ১৭ অগাস্টের বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেনের টিকেট। লাইনে সামনের দিকে যারা ছিলেন, প্রত্যাশিত টিকেট তারা পেয়েছেন। তবে পেছনে থাকা অনেককে টিকেট না পাওয়ার হতাশা নিয়েই প্ল্যাটফর্ম ছাড়তে হয়েছে। হাফিজুর রহমান নামের একজন জানান, রাজশাহীর ট্রেনের টিকেটের জন্য গত মঙ্গলবার রাত ৮টায় কমলাপুর স্টেশনে আসেন তিনি। কাউন্টারের সামনে তার সামনে ছিলেন ২৯ জন। তারপরও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরার টিকেট পাননি তিনি। হাফিজুর বলেন, এসি টিকেটের জন্য কালকে আবার আসব। যদি না পাই পরের দিন আবার আসব। তাও টিকেট না পেলে এবার ঈদে বাড়িই যাব না। ব্যাংক কর্মকর্তা আইনুল হক রাজশাহীর টিকেটের জন্য কাউন্টারে এসেছিলেন গত মঙ্গলবার রাত ১০টায়। সারা রাত অপেক্ষার পর গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় তিনি কাক্সিক্ষত টিকেট হাতে পান। আইনুল বলেন, আমি এমনিতে বাসেই যাই। কিন্তু ফোর লেইনের কাজের জন্য এবার অনেক যানজট। সময়ও বেশি লাগছে। এজন্য ট্রেনে যাব। চট্টগ্রামের ট্রেনের টিকেটের জন্যও কাউন্টারের সামনে বেশ ভিড় দেখা যায়। এ কাউন্টারের সামনে সাইফুজ্জামান শোভন নামে একজন বললেন, তিনি লাইনে দাঁড়িয়েছেন রাত ১০টায়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টিকেট হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত শোভন বলেন, এসি টিকেট চেয়েছিলাম, পেয়ে গেছি। খুবই ভালো লাগছে। আরামে যাওয়া যাবে। নারী কাউন্টারের সামনে জুঁই নামে একজন বললেন, তিনি কমলাপুরে এসেছেন রাত ৯টায়। কিন্তু এগারো ঘণ্টা অপেক্ষা করেও প্রত্যাশা অনুযায়ী এসি টিকেট পাননি। আমি রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি টিকেট চেয়েছিলাম। লাইনে আমি সবার আগে। আমিই যদি এসি টিকেট না পাই তাহলে এসি টিকেট গেল কই। এদিন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটের ট্রেনের টিকেটের চাহিদা ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি। রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুরের ট্রেন নীলসাগর ও লালমনি এক্সপ্রেসের বেশিরভাগ টিকেট বিক্রি শেষ হয়ে যায় বেলা সাড়ে ১০টার মধ্যে। একই অবস্থা দেখা যায় দেওয়ানগঞ্জের তিস্তা এক্সপ্রেসের টিকেটের ক্ষেত্রেও। গতকাল বুধবার বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনের ২৩ হাজার ৫৩৬টি অগ্রিম টিকেট দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, মোটামুটি সুশৃঙ্খলভাবেই টিকেট দেওয়া হচ্ছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত টিকেট না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসি টিকেটের চাহিদা বেশি। এজন্য সবার প্রত্যাশা অনুযায়ী টিকেট দেওয়া যায় না। তবে এখনও অনেক কাউন্টারে নন এসি টিকেট পাওয়া যাচ্ছে।