উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এই লকডাউনে কারখানা বন্ধ হলে তারা সময়মত অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারবে না ফলে ব্যাংক তাদের কোনো টাকা দেবে না। এছাড়া আসন্ন ঈদে কর্মীদের বেতন-বোনাসসহ আগামী মাসের (জুলাই) ১৫ দিনের বেতন দেয়াও তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। এ অবস্থা বিবেচনায় রফতানিমুখী কারখানা লকডাউনের আওতার বাইরে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
তৈরি পোশাক কারখানার মালিকরা মনে করেন, তৈরি পোশাক কারখানা এই লকডাউনের বাইরে থাকা উচিত। কারণ, লকডাউনে যদি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয় তাহলে শ্রমিকরা সবাই গ্রামের দিকে ছুটবে এতে আরও বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। সেই সঙ্গে আক্রান্তের হারও বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু কারখানা খোলা থাকলে তারা আর কোথাও যেতে পারবে না।
মালিকরা জানান, প্রথম দফার লকডাউনে বেশ কিছু শ্রমিক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন। পরবর্তীতে তারা সিদ্ধান্ত নেন যারা কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালাতে পারবে না তাদের কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর তখন থেকেই শ্রমিকের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে কারখানা চালু রাখা হয় যা এখনও পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের নতুন করে বিধি-নিষেধ নিয়ে বলার নেই। আগের মতোই কঠোর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ঠিক রেখে উৎপাদনে থাকতে হবে। তাছাড়া আমাদের মনিটরিংও রয়েছে। আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা শতভাগ মেনেই আগের মতো উৎপাদনে থাকতে চাই। এ বিষয় নিয়ে কোনো কারখানার কোনো অজুহাত আগেও শোনা হয়নি এখনো হবে না।’
এর আগে শুক্রবার (২৫ জুন) রাতে জরুরি তথ্য বিবরণীতে সোমবার (২৮ জুন) থেকে পরবর্তী ৭ দিন পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা দেয় তথ্য অধিদপ্তর।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, কোভিড ১৯ সংক্রমণ রোধকল্পে সোমবার থেকে পরবর্তী ৭ দিন পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।বিবরণীতে আরও বলা হয়, কঠোর লকডাউনের সময় জরুরি পণ্যবাহী ব্যতীত সব প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এছাড়া জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না।
তবে গণমাধ্যম এর আওতামুক্ত থাকবে। বিস্তারিত আদেশ শনিবার (২৬ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা হবে।এরআগে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশ করেছিল জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তখন এ বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।