চট্টগ্রাম মহানগরীর ষোলোশহর রেলস্টেশন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে কর্মসূচি পালন করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকাল থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ঘিরে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মী। এর আগের দিন শনিবার বিকালে একই এলাকায় কর্মসূচি পালনের সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় আহ্বায়ক তোফায়েল আহমেদ ও চবির যুগ্ম-আহ্বায়ক আরজু মিয়া গুরুতর জখম হন। পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এসে আন্দোলনকারীদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে হটিয়ে দেয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ জেলার সব পাবলিক-প্রাইভেট ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে গতকাল ১লা জুলাই রোববার থেকে টানা অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
কর্মসূচি পালনে রোববার সকাল থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নগরীর ষোলোশহর রেলস্টেশন এলাকায় অবস্থান নেয়। পাশাপাশি অবস্থান নিয়ে নগর ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মী তাদের কর্মসূচিতে বাধা দেয়। এরপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চবির শাটল ট্রেন চলাচলেরও নির্দেশ দেন। এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলকারীরা চবি ক্যাম্পাসেও কর্মসূচি পালন করার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। ছাত্রলীগের তৎপরতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়। এ ব্যাপারে সাধারণ ছাত্র পরিষদের চবি আহ্বায়ক অনোয়ার হোসেন জানান, শনিবার দুপুর ২টার সময় কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে নগরীর ষোলোশহরে কিছু শিক্ষার্থী অবস্থান করলে তাদের উপর ৫-৬ জন ছাত্রলীগ কর্মী অতর্কিতভাবে সশস্ত্র হামলা করে।
এতে দু’জন গুরুতর জখম হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে গতকাল রোববার থেকে টানা অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দিলেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বাধার সম্মুখীন হয় শিক্ষার্থীরা।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যেভাবে অবস্থান নেয় তাতে তারা নির্ঘাত সংঘাতের প্রস্তুতি নিয়ে আসে। কিন্তু আমরা সংঘাত এড়িয়ে অবস্থান নিই। অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের পুরো প্রস্তুতি নিয়ে আমরা অবস্থান নিলেও তা পুরোপুরি পালন করতে পারিনি।
এ ব্যাপারে নগর ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল কোনো নেতা কোনো রকম মন্তব্য করতে রাজি নন। তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, উপর মহলের নির্দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি করতে দেয়নি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।