1. rajubdnews@gmail.com : 24jibonnews : admin
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৫:২৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ:
হলোখানায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যার অভিযোগে পাষণ্ড পিতাসহ গ্রেফতার-৩ বাংলাদেশে প্রথমবার এসেই আতিথিয়তায় মুগ্ধ শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় মমতাজ বেগমের রিমান্ড শুনানি শেষে ব্রিফিংয়ের সময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও আইনজীবীরা তেজগাঁওয়ে ময়লার স্তূপে শিশুর মরদেহ সাবেক সামরিক অফিসার ও সদস্যদের নিয়ে আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়েছে জুলাই ঐক্য আবারও শুরু হতে যাচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বায়ু দূষণ! ঢাকা শহরের নিত্যসঙ্গী মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করেছে ইসি

‘মাকসুদের চলে যাওয়া মনোমালিন্যে নয়’

প্রতিনিধির নাম :
  • আপডেট এর সময় : বুধবার, ৩০ মে, ২০১৮

ব্যান্ড দল ফিডব্যাককে যারা জনপ্রিয়তার তুঙ্গে নিয়ে দিয়েছিলেন, তাদের একজন মাকসুদ। কিন্তু এই শিল্পীর সঙ্গে আবার সম্পর্ক ছেদ হয় ব্যান্ডটির।

প্রথম অ্যালবাম বের করার আগে পরের নানা ঘটনাপ্রবাহের পাশাপাশি মাকসুদের গানের দল ছেড়ে দেয়ার কথা বলছিলেন ব্যান্ডটির বর্তমান দুই শিল্পী ফুয়াদ নাসের বাবু এবং লাবু আহমেদ।

প্রথম অ্যালবাম প্রকাশের গল্পটা কেমন ছিল?

ফুয়াদ নাসের বাবু: আমরা যখন চার দেওয়ালের ভিতরে হোটেলে পারফর্ম করি তখন আমাদের সকলের মনের ভিতরে একটি খিদে জন্মাল। কারণ আমাদের গানগুলো শুধুমাত্র হোটেলে আগত বিদেশি অতিথিরা ও ঢাকার অভিজাত শ্রেণির লোকেরা উপভোগ করতেন।

ফলে আমাদের মনের আসল খিদেটা কোনভাবেই মিটছিল না। কারণ আমরা তো সাধারণ লোকের কাছে পৌঁছাতে পারছি না। সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে হলে আমাদের বাংলা গান করতেই হবে।

১৯৭৯ সালে শিল্পকলা একাডেমিতে লিও ক্লাবের একটি কনর্সাট করতে গিয়ে প্রথমবারের মত সাধারণ মানুষের সামনে আমরা পারফর্ম করি। এরপর ১৯৮৫ সালে আমরা প্রথম ‘ফিডব্যাক’ শিরোনামে বাজারে অ্যালবাম প্রকাশ করি।

ব্যান্ডের অ্যালবাম প্রকাশ হলে কেমন ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় সেই ধারণা তখন আমাদের ছিল না। কিন্তু আমরা জানতাম বিদেশে অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। সেই সময় ক্যাসেট প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সারগামের মালিক বাদল তিনি আমাদের পিছনে লেগে থেকে একটি ক্যাসেট প্রকাশ করার জন্য রাজি করালেন।

বাংলাদেশে তিনি একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছিলেন। যার ফলে প্রচুর ব্যান্ড উঠে এসেছিল। যাই হোক বাদল আমাদেরকে দিয়ে একটি অ্যালবাম করালেন যদিও তখনও আমরা তেমন একটা সিরিয়াস না। অবশেষে একটি-দুইটি করে বাংলা গান করতে করতে অ্যালবামের জন্য গান শেষ করলাম।

অ্যালবাম প্রকাশের পরে সাড়া কেমন মিলেছিল?

ফুয়াদ নাসের বাবু: আমি একবার ঈদের সময় রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড দিয়ে হাঁটছিলাম তখন এক দোকান থেকে আমাদের ফিডব্যাকের গান আমার কানে ভেসে আসে। আমার বাজানো জিনিসটা সাধারণ লোকজন শুনছেন এটার অনুভুতি অন্যরকম। এটা আমার মিউজিক জীবনের এক অন্যরকম প্রাপ্তি।

এ ব্যাপারে লাবু রহমানও শোনালেন তার অনুভুতির কথা।

‘এমনভাবে যে গান বাজতে পারে সেই কনসেপ্টটাই আমরা জানতাম না। তারপর যখন আমরা দেখলাম রাস্তায় আমাদের গান বাজছে। তার যে অনুভুতি তা অন্যরকম এক অনুভূতি এটা ভাষায় প্রকাশের মত নয়।

ফিডব্যাকের জোয়ার অ্যালবামের মোড়ক উম্মোচন নাকি সলিল চৌধুরীর হাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার কথা শুনতে চাই।

ফুয়াদ নাসের বাবু: কলকাতার এইচএমভির হিজ মাস্টার ভয়েজ থেকে ১৯৯২ সালের জানুয়ারি মাসে আমাদের ব্যান্ডের একটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। সেখানে আমরা দশটি গানের কমপ্লিমেশন করে ‘জোয়ার’ অ্যালবামটি প্রকাশ করি।

এই অ্যালবামের মোড়ক উম্মোচন করেছিলেন সলিল চৌধুরী। যেটা ছিল আমার জীবনের স্মরণীয় একটি মূহূর্ত। আমাদের অ্যালবামের মোড়ক উম্মোচনে সলিল চৌধুরীর হাতে হওয়া আমাদের ব্যান্ডের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। তিনি আমাদের যে প্রশংসা করেছেন তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। তার মত একজন কিংবদন্তদী আমাদেরকে (ফিডব্যাক) বিশেষভাবে প্রশংসা করতে পারেন এবং আমরাও প্রশংসিত হতে পারি তা আমরা কখনোই চিন্তা করিনি।

এছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অ্যালবামটির বেশ ভালো সাড়াও পেয়েছিলাম। আমরা অনেক বেশি সম্মানিত হয়ে ছিলাম।

দেহঘড়ি অ্যালবাম করার পরিকল্পনা কেন করেছিলেন?

ফুয়াদ নাসের বাবু: আবদুর রহমান বয়াতীর সঙ্গে আমরা একটা ফিউশন করেছিলাম। গানটি খুবই ভালো হয়েছিল। গানটি টেলিভিশনে প্রচারের পরে খুব জনপ্রিয়তা পেল। তখন সাউন্ডটেকের বাবু ভাই আমাদেরকে আরও কিছু গান নিয়ে অ্যালবাম প্রকাশের প্রস্তাব করেছিলেন।

কিন্তু আমরা একটি মাত্র গান দিয়েই অ্যালবাম প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম। আমরা দেখতে চেয়েছিলাম একটা এক্সপেরিমেন্টাল কাজ করলে কেমন হয়? সে সময় ক্যাসেটের যুগ ছিল।

শুধুমাত্র একটি গান দিয়েই ‘দেহঘড়ি’ অ্যালবামটি প্রকাশ করি। এক পাশে সাত বার আর অন্য পাশে সাত বার একটি গান রেকর্ড করে বাজারে প্রকাশ করেছিলাম। সেই সময় এটা একটা সফল অ্যালবাম ছিল।

হঠাৎ ফিডব্যাক থেকে চলে গেলেন মাকসুদ। তার চলে যাওয়ার কারণে ব্যান্ড কেমন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল?

ফুয়াদ নাসের বাবু: একটি দলে সবাই এক সঙ্গে চলার পরে হঠাৎ করেই একজনের অনুপস্থিতির কারণে একটা দলে একটা শূন্যতা অনুভব করেছি। তবে মাকসুদের চলে যাওয়া কোন ধরনের মনোমালিন্যের কারণে মোটেই হয়নি।

আমি ব্যক্তিগতভাবে তার গানের ধারার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেই সময়ে তিনি (মাকসুদ) একটু ফোক ঘরানার গান বেশি করতে চাইছিল। এখানে মুলত গানের ধারার বিষয়টি ছিল।

এই প্রসঙ্গে কিছুটা যোগ করলেন লাবু রহমান।

‘তিনি (মাকসুদ) অসম্ভব মেধাবী একজন শিল্পী। আমরা ফোক নিয়ে একটি অ্যালবাম করেছিলাম। যার নাম ছিলো বাউলিয়ানা। সেই অ্যালবামটি প্রকাশের পর থেকে তিনি (মাকসুদ) আরো বেশি ফোক নিয়ে কাজ করতে চাইছিলেন।’

শ্রোতাদের কীভাবে আপনারা ফিডব্যাকের গান শুনতে অভ্যস্ত করে তুলেছিলেন?

ফুয়াদ নাসের বাবু: আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব পরিবর্তন হয়েছে। আমরা যে ধরনের গান করেছি সেগুলো ছিলো পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেলের গান।

আর এখানে বৈশ্বিক একটা প্রভাবও ছিল। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণরা যেমন একই ধরনের গান শুনতে চায় ঠিক তেমনি প্রভাব বর্তমানের মত সেই সময়ও ছিল। আমরা যেহেতু সেই সময় তরুণ ছিলাম তাই তখন সেই তরুণদের ভাষায় গান করেছিলাম। তরুণরা আমাদের কনসার্টে আসত, তারা আমাদের গান উপভোগ করতেন।

মূলত সেই সময়ের তরুণ শ্রোতাদের কাছে যে কথাগুলোর চাহিদা ছিল আমরা সেই কথাগুলো বলেছিলাম। তাই হয়ত একটা যোগসূত্র তৈরি হয়ে যেতো। আমরা তাদের উপর জোড় করে কিছুই চাপিয়ে দেইনি। তাদের মনে চাহিদাগুলোই আমরা গানের মাধ্যমে তাদের কাছে তুলে ধরেছিলাম।

এই প্রসঙ্গেও কিছুটা যোগ করলেন লাবু রহমান।

‘সবাই তো আধুনিক বিষয়গুলোকে কমবেশি প্রত্যাশা করেন। কেউ আধুনিক কাপড় পরিধান করতে চায় আবার কেউ একটু আধুনিক রেস্তেঁরায় গিয়ে নতুন কিছুর স্বাদ গ্রহণ করতে চায়। ঠিক একই ভাবে আমরা সেই সময় শ্রোতাদের গানের ক্ষেত্রে আধুনিকতার যে খিদে ছিল তা আমাদের গান দিয়ে তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে চেয়েছি।’

আগামীকাল পড়ুন: ব্যান্ড সঙ্গীতের জনপ্রিয়তা নেই, এটা মানতে পারি না

পোস্টটি আপনার স্যোশাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © জীবন নিউজ ২৪ ডট কম
Theme Customized BY LatestNews