একটি ম্যাচের ফল ছাপিয়ে কখন নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে আলোচনা হয়? খুব স্বাভাবিকভাবেই অতিমানবীয় কোনো পারফরম্যান্স করলে। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) কাল ঠিক এ কাজই করেছেন আন্দ্রে রাসেল। ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জিতেছে জ্যামাইকা তালাওয়াশ। কিন্তু এ ম্যাচের ফল ছাপিয়ে সবার মুখে রাসেল-স্তুতি।
রাসেলের জাতীয় দল সতীর্থ কার্লোস ব্রাফেটের টুইট, ‘আমার দেখা সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংস না হলেও অন্যতম সেরা তো বটেই। আন্দ্রে রাসেল বিশেষ কিছু। তোমাকে টুপি–খোলা অভিনন্দন।’ রাসেলের আরেক সতীর্থ ক্রিস গেইলও বসে থাকেননি। তাঁর টুইট, ‘কী অসাধারণ ইনিংস। অসাধারণ।’ ক্রিকেট সংবাদমাধ্যম ‘ক্রিকবাজ’ তো টুইটারে রাসেল-স্তুতি সেরেছে এক শব্দে, ‘অতিমানব।’
সত্যিই অতিমানবীয় ক্রিকেটই খেলেছেন এই ক্যারিবিয়ান। যার বর্ণনা করা যায় এভাবে, ব্যাটে-বলে রাসেল এ ম্যাচে ছাপিয়ে গেছেন সতীর্থ-প্রতিপক্ষ মিলিয়ে সবাইকে। আর ক্রিকেটীয় ভাষায় কাল রাসেলের পারফরম্যান্সকে অনূদিত করা যায় এভাবে—জ্যামাইকা তালাওয়াশ অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচেই গড়েছেন সিপিএলে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। এখানেই শেষ নয়। আরও আছে!
ত্রিনবাগোর ইনিংসে বল হাতে হ্যাটট্রিক করেছেন রাসেল। ইনিংসের শেষ ওভারে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বলে তুলে নিয়েছেন ম্যাককালাম (৫৬), ব্রাভো ও রামদিনকে। গত মৌসুমে রশিদ খানের পর সিপিএলে এটি দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। তার আগে আবার দুর্দান্ত একটি ক্যাচও (ক্রিস লিনের ক্যাচ) ধরেছেন রাসেল। তবে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই রাসেলের মতো সেঞ্চুরি ও হ্যাটট্রিক করার নজির আছের কি না, তা গবেষণার বিষয়।
জয়ের জন্য ২২৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪১ রানেই ৫ উইকেট হারিয়েছিল জ্যামাইকা। এখান থেকে জয়ের স্বপ্ন দেখেননি হয়তো দলটির পাঁড় ভক্তটিও। কিন্তু কাল রাসেলের গায়ে কী ভর করেছিলে কে জানে! এ পরিস্থিতিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ফিফটি ছুঁয়েছেন মাত্র ২২ বলে। এই মৌসুমের দ্রুততম ফিফটি। তারপর সেঞ্চুরি তুলে নিতে খেলেছেন মাত্র ১৮ বল! সব মিলিয়ে ৪০ বলে করা তাঁর সেঞ্চুরিটি সিপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম। শেষ পর্যন্ত ১৩ ছক্কা ও ৬টি চারে ৪৯ বলে অপরাজিত ১২১ রানের ইনিংস খেলে রাসেল মাঠ ছেড়েছেন জয় নিয়ে।
টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে এর আগে শুধু একজন ক্রিকেটারই এক ম্যাচে হ্যাটট্রিকের সঙ্গে সেঞ্চুরি তুলে নিতে পেরেছিলেন। তিনি ইংল্যান্ডের জো ডেনলি। ভিটালিটি ব্লাস্ট টি-টোয়েন্টিতে গত জুলাইয়ে রেকর্ডটি গড়েছেন তিনি। কাল একই কীর্তি গড়ে ডেনলির রেকর্ডে ভাগ বসালেন রাসেল। তবে এসবের কিছুই হতো না যদি রাসেল ব্যাটিংয়ে নামার প্রথম বলেই আলি খানের হাতে ‘জীবন’ না পেতেন। সত্যিই রেকর্ড গড়তে ভাগ্যের সহায়তাও লাগে!