মোঃ আশিকুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার ভোমরার এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় এক পুলিশ সদস্যকে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। উক্ত পুলিশ সদস্য হলেন যশোর কোতায়ালী থানার নুরপুর উত্তরপাড়ার গোলাম নবী খাঁন পুত্র মানিক খাঁন (২৪)। তিনি কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ লাইন্সের কনস্টবল/৫৯১ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ভোমরা লক্ষিদাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী পরিমল কুমার রায়ের পরিচালিত লোকনাথ মানি এক্সচেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠান থেকে গত ৩০-৩-১৮ তারিখে সাড়ে বারোটার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আসেন। এরপর ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে তার নাম সাহাজুল কায়েস বলে পরিচয় দিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানে তল্লাসী করার নামে প্রবেশ করে। তল্লাসী করে কিছু না পেয়ে সাদা কাগজে ব্যবসায়ীর নাম, পিতার নাম, মোবাইল নাম্বার লিখে নেয়। এসময় কৌশলে প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ বক্সে থাকা ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫শত টাকা নিয়ে নিজের ব্যাগে ঢুকিয়ে ব্যবসায়ীকে নিয়ে চলে যায়। ব্যবসায়ীকে নিয়ে পদ্ম শাখরা রোডে দাঁড় করিয়ে উপরের অফিসারের দোহাই দিয়ে চম্পট দেয় পুলিশ কনস্টেবল মানিক।
পরে বিষয়টি নিয়ে উক্ত ব্যবসায়ী সাতক্ষীরা জেলা ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে খবর নিয়ে জানতে পারে সাহাজুল কায়েস নামে কোন পুলিশ সদস্য নেই। কিছু দিন পরে পুনঃরায় প্রতরণাকালে যশোরে ওয়্যারলেসসহ আটক হওয়ার বিষয়টি পত্রিকায় ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ হয়। ভোমরার ব্যবসায়ী পরিমল কুমার পত্রিকায় তার ছবি দেখে চিনতে পারেন। এরপর তিনি অনেক খোঁজাখুজি করে প্রতারক মানিকের পরিচয় জানতে পেরে গত ৩-৫-১৮ তারিখে সাতক্ষীরা সদর থানায় ১৭০/৪১৯/৪০৬/৩৮০/৫০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ শরিফুল আলম প্রতারক মানিক খাঁনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে সাতক্ষীরার সিনিয়র চীপ জুডিশিয়াল আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, প্রতারক মানিক খাঁন ইতোপুর্বে যশোরের ফজলে করিম এন্টারপ্রাইজ থেকে তার স্ত্রীর নাম্বারে ৫ হাজার একশত টাকা বিকাশ করে পালানোর সময় সাতমাইল নামক স্থান থেকে আটক হয়। এসময় তার কাছে একটি ওয়াকিটকি পাওয়া যায়। পরে কোতায়ালী থানা পুলিশের দায়েরকৃত পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬/৫০৬ ধারায় আটক হয়। ১৭ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে মামলা রেকার্ড হলে তাকে জেল হাজতে প্রেরণকালে জেল গেট থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় ধুরন্ধর মানিক। পরে পুলিশের একটি টিম সাতক্ষীরার আশাশুনিতে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধীক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।