
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখওয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারে দেশটির আধাসামরিক বাহিনী ফেডারেল কন্সটাবুলারির (এফসি) সদরদপ্তরে সোমবার (২৪ নভেম্বর) বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন। হামলা স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে সাদ্দার-কোহাট সড়কে এফসির সদরদপ্তরের প্রধান প্রবেশপথে ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, তিনজন আত্মঘাতী হামলাকারী প্রথমে গেটের কাছে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় তিনজন এফসি সদস্য নিহত হন, আর পাঁচজন আহত হন। আহতদের মধ্যে দুইজন এফসির কর্মী, তাদের সবাইকে পেশোয়ারের লেডি রিডিং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “সেনাবাহিনী ও পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে সন্দেহ করা হচ্ছে, কিছু সন্ত্রাসী এখনো সদরদপ্তরের ভেতরে থাকতে পারে।”
এই সদরদপ্তর পেশোয়ারের জনাকীর্ণ এলাকায় অবস্থিত এবং কাছেই পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর একটি ক্যান্টনমেন্ট আছে। স্থানীয় বাসিন্দা সফদার খান জানান, “সাদ্দার-কোহাট সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে।”
রয়টার্স জানায়, পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আহরার, যা তালেবান-সমর্থিত নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) অংশ, হামলার দায় স্বীকার করেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, “নিরাপত্তা বাহিনীর সময়োচিত পদক্ষেপ বড় ধরনের ক্ষতি থেকে আমাদের রক্ষা করেছে।”
এফসির সদরদপ্তরে এই হামলা চলতি বছর পেশোয়ারে নিরাপত্তা স্থাপনায় দ্বিতীয় বড় সন্ত্রাসী হামলা। ফেব্রুয়ারি ২০২৩-এ পেশোয়ারের পুলিশ লাইন্সে মসজিদে আত্মঘাতী হামলায় ৮৪ জন নিহত হয়। খাইবার পাখতুনখওয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলার মাত্রা সাম্প্রতিক মাসে বেড়েছে, বিশেষ করে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে সংঘর্ষের পর।
প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সোহাইল আফরিদি নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “এ ধরনের কাপুরুষ হামলা আমাদের মনোবল ভেঙে দিতে পারবে না। সন্ত্রাসীদের ন্যায় বিচারে আনা হবে।”
বামপন্থী দল পাকিস্তান পিপিপি’র শেরী রেহমানও নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন।