
অনলাইন ডেস্ক: জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) আঞ্চলিক প্রতিনিধি কাজুআকি কাটাওকা বলেছেন, বিনিয়োগকারীরা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখছেন। নির্বাচন যদি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয়, তবে তারা খুশি হবেন।
তিনি বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীদের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়, তবে রাজনীতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে অনিবার্যভাবে প্রভাবিত করে। বিনিয়োগকারীরা রাজনৈতিক সময়সূচির দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখছেন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক আস্থা দৃঢ় করা এবং নীতিগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য।’
জেট্রো একটি জাপানি সরকারি সংস্থা, যা জাপান ও অন্যান্য দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে কাজ করে।
কাটাওকা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য। কারণ জনগণের ভোটে গঠিত নতুন প্রশাসন সাধারণত আরও টেকসই হয়।
তিনি বলেন, ‘একবার একটি স্থিতিশীল নতুন সরকার অর্থনৈতিক নীতি ও প্রণোদনা ঘোষণা করলে, বিনিয়োগকারীদের আরও প্রবাহ প্রত্যাশা করা যায়, কারণ অনেক জাপানি কোম্পানি বর্তমানে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে।
তবে জেট্রোর এই প্রতিনিধি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবর্তন সত্ত্বেও বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের প্রবল আগ্রহ এখনো রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘জাপানি কোম্পানিগুলো সক্রিয়ভাবে তাদের ব্যবসার পরিধি বাড়াচ্ছে, যার ফলে জেট্রোর ঢাকা অফিসকে পুরো সংস্থার অন্যতম ব্যস্ততম বিদেশি অফিস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।’
২০২৪ সালে বিপ্লবের পর জেট্রো পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে কার্যরত জাপানি কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ সম্প্রসারণের প্রবল ইচ্ছা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জরিপে ৫৭ দশমিক ৭ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এই ইচ্ছা সরাসরি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিকল্পনার প্রতিফলন। এ হার এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারতের পরেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।’
কাটাওকা জানান, রপ্তানিমুখী উৎপাদন দীর্ঘদিনের প্রধান ফোকাস হলেও, এখন বিনিয়োগের আগ্রহ ক্রমবর্ধমানভাবে বাংলাদেশের আকর্ষণীয় অভ্যন্তরীণ ভোক্তা বাজার দ্বারা চালিত হচ্ছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান উচ্চ আমদানি শুল্ক এড়াতে স্থানীয়ভাবে কারখানা স্থাপনের কথা বিবেচনা করছে।
তবে উচ্চ বিনিয়োগে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও, তিনি বলেন, জাপানি কোম্পানিগুলো এখনো ক্ষুদ্র পর্যায়ের কার্যক্রমে নানা ধরনের স্থায়ী ও কখনো কখনো আরও জটিল সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
সবশেষে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাজার এখনও বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয়, বিশেষ করে দেশের ক্রমবর্ধমান ভোক্তা বাজারের কারণে। এই কারণেই জেট্রো জাপান থেকে বিপুলসংখ্যক অনুসন্ধানের কাজ পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, নীতির ধারাবাহিকতাও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।