
খেলাধুলা ডেস্ক: বর্ষা মৌসুমে ক্রিকেটারদের ঠিকঠাক অনুশীলন করানোর জন্য মিরপুর একাডেমি মাঠে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘গ্রিন হাউজ’ প্রকল্প করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। প্রায় দুই বছর ধরে এ কার্যক্রম চললেও সেখানে এখনো অনুশীলনের সুযোগ হয়নি ক্রিকেটারদের।এত অর্থ ব্যয়ে তৈরি করা গ্রিন হাউজ উইকেট ব্যবহারের আগেই এখন তুলে ফেলা হবে।
বিসিবির বর্তমান কমিটি মনে করছে, এই প্রকল্প বাস্তবে ক্রিকেটারদের কোনো কাজে আসেনি। তারা ধারণা করছেন, প্রকল্প বাড়ানোর জন্যই এখানে অর্থ ব্যয় হয়েছে। এতে নষ্ট হয়েছে একাডেমির পরিবেশ। ব্যবহারের আগেই তাই বাতিল করা হচ্ছে এ প্রকল্প। বাংলাদেশে ক্রিকেটারদের সব সুযোগ-সুবিধা শুধু মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই আছে।
বয়সভিত্তিক দল, জাতীয় দল-সবারই অনুশীলন হয় মিরপুর স্টেডিয়াম ও একাডেমি মাঠে। ইনডোরেও সুযোগ রয়েছে। বড় টুর্নামেন্ট ও বিপিএলের সময় একই জায়গায় অনুশীলন করা কঠিন হয়ে যায় ক্রিকেটারদের। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিদ্ধান্ত হয়, মিরপুরে বিসিবি একাডেমি মাঠের এক প্রান্তে ৩০ মিটার প্রশস্ত ও ৭৫ মিটার লম্বা গ্রিন হাউজ স্থাপন করা হবে। মূলত মরু কিংবা শীতপ্রধান আবহাওয়ার দেশগুলোতে কৃষি কাজে ব্যবহৃত হয় গ্রিন হাউজ। এটিকে পরে ক্রিকেটে কাজে লাগায় নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।
বৃষ্টির দিনে ছাদ ব্যবহার করা হবে, অন্য সময় ছাদ খুলে ফেলা হবে-এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই ছাদ মূলত পলিথিন জাতীয় জিনিস দিয়ে তৈরি হয়। প্রাথমিকভাবে মিরপুর একাডেমিতে উত্তর-দক্ষিণ দিক মিলিয়ে ২০টি উইকেট বানানোর পরিকল্পনা ছিল। ওই বছর জুনের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত থাকলেও পরে সময় বাড়তে থাকে। মিরপুরে বর্ষা মৌসুমে অনুশীলনের জন্য ইনডোর আছে। তবে অনেক পুরোনো হয়ে যাওয়ায় ক্রিকেটাররা সেখানে অনুশীলন করতে আগ্রহ দেখান না। প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয় দেখানো হয়। পরে বাজেট বেড়ে যায়।
বিসিবির ফ্যাসিলিটিস বিভাগের চেয়ারম্যান শাহনিয়ান তানিম বলেন, ‘এই প্রকল্প পুরোই অর্থহীন। এটা ক্রিকেটারদের কোনো কাজে আসে না। আমরা এটা তুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।’
বিকল্প ভাবনাও রয়েছে গ্রাউন্ডস কমিটি ও ফ্যাসিলিটিস বিভাগের। আগামী ২ নভেম্বরের সভায় এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গ্রাউন্ডস কমিটির সহসভাপতি আদনান রহমান দীপন বলেন, ‘গ্রাউন্ডস কমিটি ও ফ্যাসিলিটিস বিভাগ মিলে আলোচনা করে দেখেছি গ্রিন হাউজ প্রকল্পের বাস্তবে কোনো কাজ নেই। এ বিষয়ে আমরা একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করব। বোর্ড সভায় এ ব্যাপার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।’