
অনলাইন ডেস্ক: ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের চেতনায় জাতীয়তাবাদী শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এখন দেশের সবচেয়ে জরুরি কাজ। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব ছিল কেবল একটি মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা নয়, এটি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির অভ্যুদয়ের সূচনা। ওই বিপ্লবের মধ্য দিয়েই দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা পেয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “সেদিন দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত হয়ে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমেছিল জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত।”
বিএনপি নেতা উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার পর ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী নিজস্ব স্বার্থে দেশকে আধিপত্যবাদের থাবায় ঠেলে দিয়েছিল। একদলীয় বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয় এবং জনগণের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, “এই সংকটকালে ৭ নভেম্বরের বিপ্লব জাতিকে মুক্তির পথ দেখায়, বন্দীদশা থেকে মুক্ত হন মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।”
তারেক রহমান দাবি করেন, রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও সুশাসনের সূচনা হয়। কিন্তু আধিপত্যবাদী শক্তির দেশীয় সহযোগীরা ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে তাঁকে হত্যা করে। “জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তাঁর আদর্শে বলীয়ান মানুষ আজও স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ।”
বর্তমান সময়ের প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, “আবারও চক্রান্তের গোপন পথে আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা প্রায় ১৬ বছর গণতন্ত্র ধ্বংস করে রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রেখেছিল। এদের নতজানু নীতির কারণে দেশের সার্বভৌমত্ব দুর্বল হয়ে পড়ে। গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতা-কর্মীদের নির্মমভাবে দমন করা হয়, গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করা হয়, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিস্তার ঘটে।”
তিনি মনে করেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্টদের পতনের পর গণতন্ত্রের নতুন পথ উন্মুক্ত হয়েছে। “এখন প্রয়োজন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং সমাজে ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা,” বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনে এক ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানে পূরণ হয়েছিল রাজনৈতিক শূন্যতা। সেনাবাহিনী ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান মহানায়কে পরিণত হন।”
তিনি আরও বলেন, “এই বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তির পথ উন্মুক্ত হয়। বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে আসে, সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই ৭ নভেম্বরের বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।”