1. rajubdnews@gmail.com : 24jibonnews : admin
শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ০২:৪০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ:
দাম নিয়ে আড়তদারদের আশ্বস্ত করলেন ট্যানারি মালিকরা শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এখন ভারতে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকে নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যু গুরুত্ব পাবে ভারতের বিধ্বস্ত বিমানে বিদেশি আরোহী ছিলেন ৬১ জন ভারতের বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটিতে ছিলেন গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে ২৪২ জন আরোহী নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত একই ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়লেন দুই ফুটবলার হামজা চৌধুরী ও শমিত সোম লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারির! রাস্তায় লোক জড়ো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গণগ্রেফতার ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ যুক্তরাজ্য সফরের শুরুতেই কর্মব্যস্ত দিনে পার করলেন প্রধান উপদেষ্টা

কাজে আসেনি ১৭৪ কোটি টাকা

প্রতিনিধির নাম :
  • আপডেট এর সময় : শনিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৮

১৭৪ কোটি টাকা ব্যয় করার পরেও কর্ণফুলি পেপার মিলের (কেপিএম) আধুনিকায়ন কোন কাজে আসেনি। বরং উত্পাদন আগের চেয়ে ৭২ ভাগ পর্যন্ত কমে গেছে। লোকসানে জর্জরিত দেশের প্রথম পোপার মিলটির দায়দেনা সাড়ে ৭শ কোটি টাকায় ঠেকেছে। ৩০ হাজার মেট্রিক টন উত্পাদন ক্ষমতার এই পেপার মিলটি এখন গড়ে ৫ থেকে ৭ হাজার মেট্রিক টন কাগজ উত্পাদন করছে। মিলটি লাভজনক করতে পরিকল্পনা গ্রহণের পাশাপাশি মনিটরিং ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।

কর্ণফুলি পোপার মিলের আধুনিকায়নে বাস্তবায়ন করা প্রকল্পের উপর এক সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইএমইডি। প্রকল্পটি শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি) মোট ১৭৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করে। কয়েক দফা মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুন মেয়াদে এর কাজ শেষ হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রভাব নিয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এই সমীক্ষা করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের প্রথম পেপার মিল হিসেবে কর্ণফুলি পেপার মিল ১৯৫৩ সালে নির্মিত হয়। এই মিলের উত্পাদন ক্ষমতা ছিল প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন সাদা প্রিন্টিং এবং রাইটিং গ্রেড পেপার। দীর্ঘ কার্যক্রম চলার পরে এর অধিকাংশ প্লান্ট এবং মেশিনারিজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মিলের উত্পাদন ক্ষমতা অনেকাংশে হ্রাস পেতে থাকে। দীর্ঘ ২০-৩০ বছর যাবত্ কেপিএম এ কোন ওভার হোল্ডিং এর কাজ হয়নি। এছাড়া বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ কাজও নিয়মিত হয়নি। যার কারণে ঘনঘন ব্রেক-ডাউন হওয়ায় উত্পাদন হ্রাস পেয়েছে। ফলে এর আধুনিকায়নে ব্যালেন্সিং, মর্ডানাইজেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (বিএমআর) বাস্তবায়ন করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কাগজ শিল্পের প্রযুক্তি এতটাই প্রসারিত হয়েছে যে কেপিএম এর মত ৫২ বছরের পুরাতন একটি মিলের জন্য বিএমআর কোন কাজেই আসেনি। ১৯৯৬ সালে মূলত একটি পরিকল্পিত ধারণার উপর ভিত্তি করে কেপিএম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করেছে। কিন্তু পুরানো প্রযুক্তির কারণে এ প্রকল্পটির ধস শুরু হয় ২০০৭ সালে।

বর্তমানে দেশের স্থানীয় কোম্পানিগুলো ২ লাখ মেট্রিক টন সাদা কাগজ, আড়াই লাখ মেট্রিক টন অফসেট পেপার এবং ২ লাখ মেট্রিক টন নিউজ পেপার উত্পাদন করছে। প্রতিবছর গড়ে ১০ শতাংশ হারে কাগজ উত্পাদন বাড়ছে। দেশে শুধু এনসিটিবি প্রতি বছর ৬৫ হাজার মেট্রিক টন কাগজ ব্যবহার করে। কেপিএম প্রতিবছর বাজারে শুধু ৫ থেকে ৭ হাজার মেট্রিক টন কাগজ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের ফলে খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় মিলের লোকসানের মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটন কাগজ উত্পাদন খরচ হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৭ টাকা। গড়ে বিক্রি করেছে ৯৫ হাজার টাকায়। ফলে প্রতিবছরই লোকসান বাড়ছে।

প্রাপ্ততথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০০৭ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত কর্ণফুলি পেপার মিলের উত্পাদন হ্রাস পেয়েছে ১৭ হাজার ৩০৪ মে. টন (হ্রাস হার ৭২%)। লোকসানের কারণে এর দায়দেনা সাড়ে ৭শ কোটি টাকায় ঠেকেছে। প্রতিমাসে গড়ে ৭ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যয় সাশ্রয়ী কিছু পদক্ষেপ ও জনবল স্থানান্তর করে এর মাসিক লোকসানের পরিমাণ ২ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে বলে মিল সূত্রে জানা যায়। মিলটিকে লাভজনক করতে মিলের অব্যবহূত জায়গায় আরো পেপার মিল স্থাপন করে একে নতুন করে পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। মিলটি নিয়মিত মনিটরিং এর ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছে আইএমইডি।

সুপারিশে বলা হয়েছে, অন্যান্য বেসরকারি পেপার মিলের মতো পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে। যেমন টিস্যু উত্পাদন করা যেতে পারে। কর্ণফুলি পেপার মিলে ১ লাখ ২৭ হাজার একর বনভূমি রয়েছে। এর যে পরিমাণ সম্পদ, ভূমি ও কাঁচামাল রয়েছে তাতে এর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আংশিক উন্নয়ন না করে সম্পূর্ণ প্রতিস্থাপন করা উচিত। কর্ণফুলি পেপার মিলের কাগজ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সকল শিক্ষা বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন সরকারি একাডেমিসহ অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে। তাই কাগজ উত্পাদনের নতুন প্লান্ট তৈরি করে একে লাভজনক করার অনেক সুযোগ রয়েছে।

বিসিআইসি সূত্রে জানা যায়, গেল বছর নভেম্বরে বিসিআইসির বোর্ড সভায় কর্ণফুলি পেপার মিলকে ১৩৬ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুরি দেওয়া হয়। বর্তমানে ডি-ইঙ্কিং প্ল্যান্ট স্থাপন, ট্রিপল ডিস্ক রিফাইনার সংগ্রহ করা, নিজস্ব অক্সিজেন প্ল্যান্ট এর রক্ষণাবেক্ষণে উদ্যোগ নেওয়াসহ উত্পাদন নিরবচ্ছিন্ন করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হলে পেপার মিলটির উত্পাদন বাড়বে বলে আশা করা হয়েছে।

পোস্টটি আপনার স্যোশাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © জীবন নিউজ ২৪ ডট কম
Theme Customized BY LatestNews