কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জঙ্গিবাদি কর্মকাণ্ডের মিল আছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আকতারুজ্জামান।
রোববার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ক্যাম্পাসে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রাতের বেলা বিভিন্ন হল থেকে নারী শিক্ষার্থীদের মিছিল করা নিয়েও সমালোচনা করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, তালেবান নেতা মোল্লা ওমর ও উসামা বিন লাদেনের মতো ভিডিও বার্তা পাঠানো হচ্ছে। জঙ্গিরা যেভাবে শেষ অস্ত্র হিসেবে নারীদের ব্যবহার করে, সেভাবে কোটা আন্দোলনেও ছাত্রীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় এসব মেনে নেবে না। ফৌজদারি অপরাধ করলে আইনের শাসন কার্যকর হতে হবে।
কোটা আন্দোলনের সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ আছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ঢাবি ভিসি আখতারুজ্জামান বলেন, কোন সংগঠন জানি না। কিন্তু ফেসবুকে যে ভিডিও দেখেছি, সে ভিডিও জঙ্গিদের ধরনের। সেখানে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার কথা বলা হয়েছে। এসব দেখে মনে হয়েছে অশুভ কোনো শক্তির তৎপরতা রয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে লন্ডন থেকে উস্কানি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ঢাবি ভিসি।
অধ্যাপক ড. মো. আকতারুজ্জামান বলেন, অশুভ শক্তির তৎপরতায় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অশুভ শক্তি ঢুকতে চাচ্ছে। তার প্রমাণ হিসেবে ভিসি বলেন, লন্ডন থেকে ফোন করে তাদের এক সহকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনো অশান্ত পরিবেশ বরদাশত করা হবে না।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। সমাবেশ থেকে কোটা সংস্কার কর্মীদের নির্যাতন ও আটকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
পরে একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা। সেখানে আটককৃতদের দ্রুত মুক্তি ও হামলার ঘটনায় শাস্তির দাবি জানান তারা।
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, গ্রেফতার, সহিংসতা ও হয়রানির প্রতিবাদে পদযাত্রা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
কোটা আন্দোলন যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত:সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী রোববার বেলা ১১টায় ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দের’ ব্যানারে ঢাবি ক্যাম্পাসে পদযাত্রাটি বের হয়। পদযাত্রাটি শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। এতে সঞ্চালনা করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছাত্রদের ওপর নিষ্ঠুর হামলার নিন্দা জানিয়ে সমাবেশে শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক, লজ্জাজনক ও অবিশ্বাস্য। এটি পাকিস্তান বা ব্রিটিশ আমলেও ঘটেনি।
তিনি বলেন, কোটা আন্দোলন যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত। এজন্য ছেলেমেয়ে, অভিভাবক, শিক্ষক সবাই এতে সমর্থন দিয়েছে। ৫৬ শতাংশ কোটা অত্যন্ত অযৌক্তিক। আন্দোলন করেছে বলে সরকার কমিটি করতে বাধ্য হয়েছে।