নতুন শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করে অবিলম্বে সিন্ডিকেট সভা ডাকার দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের প্রশাসনিক কার্যালয় ঘেরাও করেছে আ’লীগপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।’
রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবিরের অনুসারী শিক্ষকরা তাদের সংগঠনের ব্যানারে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন।
এদিকে, প্রশাসনিক কার্যালয় ঘেরাও থাকার কারণে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম অফিসে আসেননি। ফলে আজকের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের একটি নিয়োগ বোর্ড এবং একটি পদোন্নতি স্থগিত করা হয়। অন্যদিকে অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেনি।
‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’-এর সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের করা একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানালেও কোন সমাধান হয়নি। আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল রমজান মাসে কোন আন্দোলন করব না। কিন্তু প্রশাসন আমাদের বাধ্য করেছে।’
তিনি অযাচিত নিয়োগের বিরোধিতা করে বলেন, ‘একটি বিভাগে ৩৪ জন শিক্ষক থাকার পরও অযাচিতভাবে নতুন চারজন শিক্ষক নিয়োগের পাঁয়তারা করছে প্রশাসন। এটা কোনভাবেই সম্ভব হতে পারে না।’
এদিকে অবরোধের বিরোধিতা করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘অবরোধ কখনও ভালো কিছু বয়ে আনে না। আলোচনার পথ খোলা আছে। তারা (আন্দোলনকারী শিক্ষক) চাইলে অবশ্যই সমাধান আছে।’
শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘একটি বিভাগে প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ হয়ে থাকে। তাই এটি নিয়ে রাজনীতি করার কিছু নেই। তবে তাদের (আন্দোলনকারী শিক্ষক) আপত্তির কারণে আজকের মতো নিয়োগ বোর্ড স্থগিত থাকছে।’
উপাচার্যকে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে ‘প্রতিবাদের নাম জাহাঙ্গীরনগর’-এর ব্যানারে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১১টায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে চার দফা দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করেন। এসময় উপাচার্য দাবি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হচ্ছে- সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, ছাত্র আন্দোলনে পুলিশি নিপীড়ণ বন্ধ করা, হল বন্ধের মতো ছাত্র স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ না নেয়া ও পুলিশি নির্ভরতায় না গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমেই ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা রক্ষা করা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক, জাবি সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পাপ্পু, ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী) এর সাধারণ সম্পাদক মাহাথির মোহাম্মদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী।