স্বাস্থ্য খাতের গত তিন বছরে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পরিধি বাড়লেও মৌলিক অগ্রগতি তেমন হয়নি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে বিভিন্ন উদ্যোগে কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারের জোরালোভাবে নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। এ ছাড়া এই খাতের নিয়োগ,ক্রয় ও পদোন্নতিতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে টাকার খেলা, দলবাজি ও স্বজনপ্রীতি। সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের বিষয়টি বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকলেও এখনও তা নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার। দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনও উন্নত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্য খাতে বেশকিছু সাফল্য থাকলেও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়েছিল, দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের তিন বছর অতিবাহীত হওয়ার পরেও সেগুলো পূরণে তেমন অগ্রগতি নেই। এখনও চূড়ান্ত হয়নি চিকিৎসাসেবা আইন। ফলে দেশের সাধারণ নাগরিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে এখনও অনিরাপদই রয়ে গেছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ওষুধ নীতির খসড়া মন্ত্রিসভায় পাস হলেও এটি বাস্তবায়ন হয়নি। আর্সেনিক সমস্যার সমাধান ও ২০১১ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি নিশ্চিত হয়নি। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না মানহীন ওষুধ উৎপাদন। থেমে নেই ভুয়া হাসপাতাল, নার্স, চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য। এ খাতের জনবল সংকট কাটাতে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও রাজনৈতিক বিবেচনা এবং সরকার সমর্থক চিকিৎসক সংগঠনের নেতিবাচক তৎপরতায় সরকারের সাফল্য অনেকটাই ম্লান হয়ে পড়েছে।
ভুয়া হাসপাতাল, ডাক্তার, নার্স :
সার্টিফিকেট, ডিগ্রি কিংবা কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই হাসপাতাল খুলে বসছে প্রতারক চক্র। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিস্তৃত এ ধরনের ভুয়া ডাক্তারের ফাঁদে প্রতিনিয়তই পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। শক্তিশালী একটি চক্র প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে ও বাহারি বিজ্ঞাপন দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে এ প্রতারণা বাণিজ্য। প্রশাসন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখেও না দেখার ভান করছে। অভিযানে মাঝে মাঝে এরা ধরা পড়লেও অর্থের বিনিময়ে পার পেয়ে যায়। সরকারের পক্ষ থেকে স্থায়ীভাবে এ সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেই। এর একটি প্রতিষ্ঠান খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানাধীন চুকনগর বাজার, সাতক্ষীরা রোড ,পেট্রোল পাম্পের দক্ষিণ পাশে। চুকুনগর মেডিকেল এন্ড ডায়াগনষ্টিত সেন্টার কথিত এই হাসপাতালরে রয়েছে ভুয়া ডাক্তার উজ্জল বিশ্বাস যার নেই কোন প্রতিষ্ঠানিক সনদপত্র। সামান্য কিছু দিন ডাক্তারদের কাছে থেকে নিজেই হয়ে গেছেন এম. বি. এস. ডাক্তার এ বিষয় কথিত ডাক্তার উজ্জল বিশ্বাস এর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করলে উজ্জল বলেন প্রথমে নিজেকে এম বি এস ডাক্তার বলে পরিচয় দেন এক পর্যায় নিজেই শিকার করেন যে, তিনি আসলে ডাক্তার নন কিন্তু তিনি রোগীদের যে ঔষুুধপত্র দেন তা খেয়ে রোগীরা ভালো হয়ে যায় তাছাড়া আমি যে কয়টা অপারেশন করেছি তারা সবাই সুস্থ আসেন। হাসপাতালের পরিবেশ এতই খারাপ যে হাসপাতালে ঢুকলে ঘন্ধে পেট ভরে যায়। এই হাসপাতালে ঢুকলে যদি কেউ কোন ধরনের হাসপাতাল নিয়ে প্রশ্নকরে করে তাহলে সাথে সাথে ভুয়া ডাক্তার উজ্জল বিশ্বাস তার লালিত-পালিত কথিত সাংবাদিকদের লেলিয়ে দেন। তাছারা উজ্জল বিশ্বাস গর্ব করে বলেন আমার এ হাসপাতালে এসে কেউ হালি হাতে ফেরে না। কিছু দিন আগে ঢাকা থেকে অপরাধ সংক্রান্ত একটি পত্রিকার সম্পাদক আচ্ছিলেন তাকেও কিছু দিয়েছেন। চুকুনগর মেডিকেল এন্ড ডায়াগনষ্টিত সেন্টারের মালিক পরিচয় দান কারী রেবেকা নামের একজন মোবাইল ফোনে বলেন আপনারা কোন সাহসে আমার হাসপাতালে গিয়েছেন আমি ঢাকায় থাকি আমার অনেক ক্ষমতা আমি হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বলে দিয়েছি আমার হাসপাতালে কোন সাংবাদিক, কোন মানবদারিকার কর্মী অথবা অন্য কোন ধরনের প্রতিবাদ কারী হাসপাতালে আসলে তাদের হাত পা ভেঙ্গে দেয়ার অর্ডার দিয়েছি। তাছাড়া ঢাকা শহরের দৌলাইপাড়ে আসে আমার একাদিক হাসপাতাল। চুকুনগর মেডিকেল এন্ড ডায়াগনষ্টিত সেন্টারের বিষয় ডুমরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এখানে নতুন এসেছি তাই আগে কি হয়েছে তা আমি জানি না তবে আমি অবশ্যই এ হাসপাতালের বিষয়ে খোজখবর নিব সাথে সাথে কোন প্রকার অন্যায় অপরাধ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি যতদিন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হবে, ততদিন দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না। তেমনি বন্ধ করা যাবে না যত্রতত্র অনুমোদন বিহীন হাসপাতাল, ডায়াগনষ্টিত সেন্টার ও ভুয়া ডাক্তার চুকুনগর মেডিকেল এন্ড ডায়াগনষ্টিত সেন্টারের বিষয় প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এলাকাবাসী অনুরোদ জানিয়েছেন খুলনা জেলা সিবিল সার্জেন ও ডুমরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ।