ধামরাইয়ে একটি গুদাম ঘরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দুই হোটেল ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের জন্য রাতভর নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ সময় তাদের পাশে দুটি পিস্তল কিছু ইয়াবা ট্যাবলেট রেখে মোবাইলে ছবি তুলে ক্রস ফায়ারের হুমকি দেয়া হয়। মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয় তিন লাখ টাকা। এ খবর পেয়ে কৌশলে আশুলিয়া ও ধামরাই থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। রোববার রাতে ধামরাইয়ের আইঙ্গণ এলাকার ওই গুদাম ঘর থেকে অপহৃতদের উদ্ধার ও অপহরণকারীদের আটক করা হয়। এ সময় পুলিশ লেখা একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়।
আটকরা হচ্ছে- ধামরাইয়ের গাইরাকুল গ্রামের মৃত অধীর চৌধুরীর ছেলে দেবাশীষ চৌধুরী ও চুন্না গ্রামের নিতাই সরকারের ছেলে দীপক সরকার। গতকাল তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ও অপহৃতরা জানায়, শনিবার গভীর রাতে দেবাশীষ চৌধুরী ও দীপক সরকার নামে দুই অপহরণকারী নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাভারের আশুলিয়া থানার পলাশবাড়ি এলাকার মিজানুর রহমানের ভাড়াটিয়া হোটেল ব্যবসায়ী জামাল হোসেন (৪০) ও ফারুক হোসেনকে (২০) পুলিশ লেখা একটি সাদা প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাদের ধামরাইয়ের আইঙ্গণ এলাকার মেসার্স অর্নব এন্টারপ্রাইজ নামে একটি গুদাম ঘরে আটকে রেখে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। এ সময় তাদের সামনে দুটি পিস্তল ও কিছু ইয়াবা ট্যাবলেট রেখে মোবাইল ফোনে ছবিও তুলে অপহরণকারীরা। এরপরই তাদের মোবাইল ফোন দিয়ে পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে তাদের ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে হোটেল ব্যবসায়ী জামাল হোসেনের এক আত্মীয় আনোয়ার হোসেন ধামরাইয়ের ওই গুদাম ঘরে গিয়ে দেবাশীষের কাছে ৫০ হাজার টাকা দেন এবং বাকি টাকা আগামীকাল দেয়া হবে বলে তিনি সেখান থেকে কৌশলে বের হয়ে ধামরাই থানা পুলিশকে জানান। পরে সন্ধ্যায় ধামরাই ও আশুলিয়া থানা পুলিশ ওই গুদাম ঘরে অভিযান চালিয়ে মুক্তিপণের ৫০ হাজার টাকাসহ অপহৃতদের উদ্ধার এবং দুই অপহরণকারীকে আটক করেন। এ সময় পুলিশ লেখা অপহরণকারীদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটিও (ঢাকা মেট্রো-গ-১৪-৫০৪৮) জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া হোটেল ব্যবসায়ী জামাল হোসেন ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গি থানার লাকসামপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও ফারুক হোসেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার নান্দাইল গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে। তারা সাভারের আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকায় ভাড়া থেকে দীর্ঘদিন ধরে হোটেলের ব্যবসা করে আসছিল। অভিযোগ রয়েছে, ধামরাইয়ে পুলিশ লেখা প্রায় ৩০টা প্রাইভেটকার চলাচল করতে দেখা যায়। তারা আসলে ধামরাই থানা পুলিশ কি না সন্দেহ এলাকাবাসীর।