বল বিকৃতির ঘটনায় পুরো ক্রিকেট বিশ্বেই এখন নিন্দিত অস্ট্রেলিয়া দল। দীর্ঘকাল ধরে যারা ক্রিকেট মাঠে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে এসেছে, তারাই এখন মানুষের মুখে সমালোচিত। কেপটাউন টেস্টে দলীয় অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের বল টেম্পারিং কাণ্ডে অন্যদের মতো ক্ষুব্ধ সাবেক ক্যারিবিয়ান পেসার এবং বাংলাদেশ দলের বর্তমান বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশও। তিনি এই ঘটনাকে দুঃস্বপ্নের মতো দেখছেন। সম্প্রতি কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওয়ালশ বলেন, ‘শুধু ক্রিকেট কেন, যেকোনো খেলাতেই এমন প্রতারণার কোনো জায়গা নেই। ‘স্পিরিট অব দ্য গেম’-এ আমি আগে থেকেই বিশ্বাস করে এসেছি। খেলার মাঠে অবশ্যই জিততে চাই। কিন্তু মনোভাব ঠিক রেখে সঠিক পথেই সেটা জিতব। আমার ক্রিকেট মন্ত্র ছিল এটাই। এই শিক্ষায়ই আমি বড় হয়েছি। কোনো দিন এর বিপরীত কিছু ভাবিনি।
প্রশ্ন রেখে সাবেক এ ক্রিকেটার বলেন, ‘খেলার মাঠে প্রতারণা করে জেতাটা কি কোনো জেতা নাকি? বরং তার চেয়ে মাথা উঁচু করে হারাটা অনেক সুখের। বল বিকৃতির মত এমন প্রতারণা কখনোই মেনে নেয়া যায় না। আশা করব, এমন ঘটনা যেন এটাই শেষ বার দেখলাম। যেন আর কোনোদিন না দেখতে হয়।’
নিজেদের সময়কার রিভার্স সুইং নিয়েও কথা বলেন ওয়ালশ। তার মতে, ‘রিভার্স সুইংয়ের জন্য বলের একপাশ ভারী করতে হয়। সেটার জন্য থুতু বা আঠালো কিছু লাগালেই হয়। এটা একটা আর্ট। কারও নাম বলতে চাই না। তবে আমাদের সময়েও শুনেছি যে, অনেকেই লোশন বা ক্রিম দিয়ে রিভার্স সুইংয়ের জন্য বলকে তৈরি করেছে। কিন্তু এখন তো দেখছি বোলাররা মাঠের বাইরে থেকেই দ্রব্য নিয়ে মাঠে প্রবেশ করছে। এটা কখনোই ক্রিকেটের অংশ হতে পারে না।’
বল বিকৃতির এমন প্রতারণাকে হালকা ভাবে না নেয়ার উপদেশ দেন বাংলাদেশের ক্যারিবিয়ান বোলিং কোচ। ক্রিকেটপ্রেমীদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাকে হালকা ভাবে নেয়া উচিত নয়। খেলাটা সব সময় দর্শকদের জন্য। সবার আগে তাদের কথা ভাবা দরকার। তারা নিশ্চয়ই প্রতারণামূলক খেলা উপভোগ করবেন না। দর্শকরা মাঠে আসেন বা টিভির সামনে বসেন খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা উপভোগ করতে। সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে যোগ্যতা নির্ভর, কখনো প্রতারণা বা দুর্নীতি-নির্ভর নয়।’