প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পশ্চিমবঙ্গ সফরকে ‘ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বিদেশিদের কাছে দৌড়ঝাঁপ’ হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।
প্রধানমন্ত্রী দুই দিনের সফর শেষ করে শনিবার দেশে ফেরার পরদিন রবিবার দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন এবং কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি লিট ডিগ্রি নিতে শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ যান প্রধানমন্ত্রী। শনিবার রাতে দেশে ফেরেন তিনি।
দ্বিপাক্ষিক সমস্যার বা বাণিজ্যিক বিষয় এই সফরের উদ্দেশ্য নয় সেটা আগেই জানিয়েছিল সরকার। তারপরও শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক ঘণ্টা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে শনিবার আধা ঘণ্টা একান্তে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বাংলাদেশ বা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
মমতা তার বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মিনিট চারেক কথা বললেও আলোচিত তিস্তা চুক্তি নিয়ে একটি কথাও বলেননি।
রিজভী বলেন, ‘সরকার এখন নিজ দেশের জনগণকে বাদ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এখন মুরুব্বিদের কাছে দেনদরবার শুরু করেছে। কারণ সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের দুঃশাসনের জবাব দিতে মানুষ প্রস্তুত হয়ে আছে।’
সরকারি অর্থ ব্যয় করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে আকুতি জানাতে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর করেছেন বলেও মন্তব্য করেন রিজভী। বলেন, ‘দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে সরকার দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে ট্রানজিটসহ ভারতকে সব কিছু উজাড় করে দিয়েছেন। কিন্তু বিনিময়ে কিছুই পায়নি বাংলাদেশ।’
‘তবে প্রতিদান হিসেবে ক্ষমতা ধরে রাখতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন বলে খবর দিয়েছে ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।’
‘গণমাধ্যমের খবরে এটা পরিষ্কার প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থে ভারত যাননি, তিস্তার পানির জন্য যাননি, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে যাননি, তিনি গেলেন ক্ষমতায় টিকে থাকার দেনদরবারে।’
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনেরও তীব্র নিন্দা করেন রিজভী। বলেন, ‘ইসির কার্যকলাপে জনগণ মনে করে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দিয়ে বাংলাদেশে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ সিইসি এখন পর্যন্ত তাঁর কার্যকলাপে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেননি। জাতীয় নির্বাচন যতোই ঘনিয়ে আসছে সিইসির অনুগত ভূমিকা ততোই স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।’