গাজা সীমান্তে সরাসরি গুলি চালিয়ে শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে পিটিশন দায়ের করেছিলো দুটি মানবাধিকার সংস্থা। বৃহস্পতিবার সেই পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে ইসরায়েলের সর্বোচ্চ আদালত। ইসরায়েলি বাহিনীর সরাসরি গুলি বন্ধের জন্য করা পিটিশন খারিজ করার পাশাপাশি সরাসরি গুলি করার পক্ষে রায় দিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
তিনজন বিচারকের ওই বেঞ্চ প্রকৃতপক্ষে ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ নেয়। পিটিশন খারিজের পর আদালতের দেয়া বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদেরকে ইসরায়েলিদের জন্য ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক উল্লেখ করে তাদের রুখতে ইসরায়েলি বাহিনীকে সরাসরি গুলি করার বৈধতা দেয়া হয়। খবর আল জাজিরার।
ইসরায়েল বলছে, সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইন মেনে সরাসরি গুলি করছে তাদের বাহিনীর সদস্যরা। সংঘাত সৃষ্টিকারী হামাসের বিক্ষোভ থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই তারা সরাসরি গুলি করছে বলেও জানায় ইসরায়েল।
পিটিশন খারিজ করে জারি করা রুলে ইসরায়েলি বাহিনীর সরাসরি গুলি করার পক্ষে মত দেয় ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট। গাজা সীমান্তে সরাসরি গুলি বন্ধের জন্য পিটিশন দায়ের করে ইসরায়েলে আরব সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা মানবাধিকার সংগঠন `আদালত’ এবং ‘আল মিজান’।
শুক্রবার দেয়া এক বিবৃতিতে দুই মানবাধিকার সংগঠন জানায়, পিটিশনে উপস্থাপিত বিস্তারিত প্রমাণ ও গাজায় নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদেরকে হত্যার নৃশংস ঘটনার বর্ণনা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার একাধিক রিপোর্ট সহ বিভিন্ন প্রমাণ সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের সর্বোচ্চ আদালত।
এছাড়া পিটিশনে প্রমাণ হিসেবে দেয়া ভিডিওগুলোও প্রত্যাখান করে আদালত। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, আদালত প্রকৃতপক্ষে মামলার তদন্তের পরিবর্তে রাষ্ট্রের সঙ্গে ঐক্যমত্য পোষণ করেছে।
গত ৩০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত আড়াই মাস ধরে গাজা সীমান্তে বিক্ষোভ করে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা। এসময় কয়েক সপ্তাহে এসব নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর সরাসরি গুলি করে শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ১৪ মে জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরের প্রতিবাদে করা বিক্ষোভে গুলি করে ৬০ জনেও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
এঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ ও সংগঠন। এছাড়া এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায় অনেক দেশ। জাতিসংঘের জরুরী বৈঠকে গাজার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের প্রস্তাব উঠলে এর বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে এ ঘটনায় হামাসকে দায়ী করে। সর্বশেষ ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর সরাসরি গুলির পক্ষে মত দিলো।