ছোট কাল থেকেই মোটরসাইকেলের শখ ছিল রিফাতের। এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করার পরই মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য বাবার কাছে আবদার জানায়। বাবা নাছোড় বান্দা, দুর্ঘটনার কথা ভেবেই ছেলের প্রস্তাব বারবার নাকচ করেন তিনি। এদিকে রিফাত মোটরসাইকেল না পেয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। এ খবর বাবার কানে যাওয়া মাত্রই ছেলের জীবন রক্ষার্থে আবদার পূরণের উদ্যোগ নেন। ছয়মাস আগে ছেলের পছন্দ অনুযায়ী প্রায় ৬লাখ টাকা দিয়ে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন। আর সেই মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা কেড়ে নিলো রিফাতের প্রাণ।
২৬ মে শনিবার গাজীপুর জেলার শ্রীপুর পৌরসভার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ২নং সিএন্ডবি বাজার এলাকায় রিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় রিফাত। পরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
রিফাত আহমেদ (২২) পৌর এলাকার বেড়াইদেরচালা গ্রামের আলহাজ্ব ধনাই বেপারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিনের ছেলে। সে আশুলিয়ায় অবস্থিত সিটি ইউনির্ভাসিটির ¯œাতক সম্মান (ইংরেজি) বিভাগের ছাত্র।
রিফাতের বাবা রুহুল আমিন জানান, প্রায় মাস ছয় আগে ছেলে আবদার পুরণ করতে এপ্রিলিয়া ব্র্যান্ডের একটি মোটরসাইকেল প্রায় ৬লাখ টাকা খরচ করে কিনে দিয়েছিলেন। খুবই শান্তশিষ্ট প্রকৃতির ছেলে ছিল সে। তবে যখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটিতে বাড়ি আসতো মোটরসাইকেলকে সঙ্গী করেই সারাদিন কাটতো তার। শনিবার সকালে মাওনা চৌরাস্তায় অবস্থান করা বন্ধুদের সাথে দেখা করতে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। পরে ২নং সিএন্ডবি এলাকায় একটি রিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ছিটকে পড়ে। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শ মতে তাকে রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুরে সে মারা যায়। তার আক্ষেপ, ছেলের জীবন রক্ষার্থে আত্মহত্যার পথ থেকে ফেরাতে তিনি মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন, আর সেই মোটরসাইকেলই তার মৃত্যুর কারণ হলো। তিনি ছেলের এ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।