মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন,বাঁশখালী:
ঢেঁকি আমাদের গ্রাম বাংলার প্রাচীন গ্রামীণ ঐতিহ্যের একটি সামগ্রী।গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশেও এর একটা বিশেষ গুরুত্ব ছিল।গ্রামীণ নারীরা চালের গুঁড়া দিয়ে চিতল পিঠা,রুটি পিঠা,তালের পিঠাসহ হরেক রকমের পিঠা তৈরী করতেন।এসব তৈরী হতো ঢেঁকি ছাঁটা চালের গুঁড়া দিয়ে।কালের বিবর্তনে এসব পিঠা তৈরীতে ঢেঁকি ছাঁটা চালের গুঁড়া তেমন ব্যবহার হয়না বললেই চলে।এক সময় গ্রাম-গঞ্জ সহ সর্বত্র ধান ভাঙ্গা,চাল তৈরী,গুঁড়া কোটা,চিড়া তৈরী,মশলাপাতি ভাঙ্গানো সহ বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি।ঢেঁকিতে চিড়া কোটা আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের অংশ জুড়েই আছে।ঢেঁকি ছাঁটা চালের কদর ছিল খুব বেশি।তাই ঢেঁকি ছাঁটা চালের চাহিদা আজও কমেনি। এক সময় গ্রামের গৃহস্থ বাড়িতে ঢেঁকি থাকাটা বনেদি সমৃদ্ধ গৃহস্থ পরিবারের পরিচয় বহন করত।এখন কালের পরিক্রমায় আমাদের ঐতিহ্যের ঢেঁকি বিলুপ্ত।গ্রাম বাংলার গৃহস্থ বাড়িতে শোনা যায় না ঢেঁকির ছন্দময় শব্দ।ঢেঁকি একদা আমাদের কৃষিকাজে নির্ভর গ্রামীণ জনপদে খুব দরকারী সামগ্রী ছিল।বর্তমানে গ্রামে-গঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি খুঁজে পাওয়া কঠিন।কালের বিবর্তনে বর্তমানে আমাদের অতীত ইতিহাস-ঐতিহ্য,সমাজ-সংস্কৃতির অংশ ঢেঁকির ব্যবহার হারিয়ে যাচ্ছে।আর এর ব্যবহার হারিয়ে গিয়ে ঢেঁকি এখন বিলুপ্ত। বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামের প্রান্তিক চাষী আব্বাছ উদ্দিন বলেন,”আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারের ফলে এখন ঢেঁকিশিল্প বিলুপ্ত।ব্যবহার না থাকায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি।আমাদের ছেলেমেয়েরা ঢেঁকি চিনেনা।নতুন প্রজন্ম এই প্রাচীন ঐতিহ্য সম্পর্কে তেমন জানেনা।তৎকালীন সময়ে আমরা জমি থেকে পাকা ধান কেটে এনে ঢেঁকিতে মাড়াই করতাম।এখন এই কাজটা মেশিনে সেরে নেই।মূলত ঢেঁকির ব্যবহার কমে যাওয়ার কারণে এটি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।