
অনলাইন ডেস্ক: মানব সভ্যতার ইতিহাস বদলে দিতে পারে টেসলা সিইও ইলন মাস্কের তৈরি করা হিউম্যানয়েড রোবট ‘অপ্টিমাস’। এটি শুধু দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পন্ন করবে না, বরং ভবিষ্যতে মানুষের ‘ডিজিটাল কপি’ তৈরি করতেও সক্ষম হতে পারে। মাস্কের মতে, অপ্টিমাস একটি মানুষের চেতনা, ব্যক্তিত্ব এবং স্মৃতিশক্তি ‘অধিগ্রহণ’ করতে পারবে এবং হুবহু তার মতো হয়ে যেতে পারবে।
অপ্টিমাস-এর ধারণা প্রথম প্রকাশ করা হয় ২০২১ সালে। এটি একটি স্বয়ংক্রিয়, বাইপেডাল (দুই পায়ে হাঁটা সক্ষম) রোবট, যার উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি এবং ওজন প্রায় ৫৬ কেজি। রোবটটি হাটতে পারে এবং দৈনন্দিন কাজ যেমন জিনিসপত্র তোলা-রাখা, ঘর মুছা, সামগ্রী সাজানো ইত্যাদি করতে সক্ষম।
মাস্ক জানান, অপ্টিমাস-এর মস্তিষ্কে কাজ করছে টেসলার তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এটি নিউরালিঙ্ক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত, যা মানুষের মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ শনাক্ত করতে পারে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কারও মস্তিষ্কে কী চলছে তা শনাক্ত করে সেই তথ্য অপ্টিমাসে আপলোড করা সম্ভব হতে পারে।
অর্থাৎ, একটি মানুষের চেতনাকে পুরোপুরি রোবটে প্রতিফলিত করা সম্ভব হবে। তবে মাস্ক সতর্ক করেছেন, এটি এত তাড়াতাড়ি ঘটবে না। প্রযুক্তির বর্তমান সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে দ্রুত চলমান উন্নয়নের কারণে তিনি আশাবাদী, পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব হতে পারে।
টেসলার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অপ্টিমাস মানব শ্রম হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এটি সাধারণ গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি বিপজ্জনক বা একঘেয়ে কাজেও মানুষের বিকল্প হিসেবে ব্যবহারযোগ্য হবে। এছাড়া, শিক্ষাক্ষেত্র, স্বাস্থ্যসেবা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল উৎপাদন এবং গবেষণার মতো ক্ষেত্রেও এর প্রয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে। অপ্টিমাস শুধু একটি রোবট নয়, বরং এটি প্রযুক্তি এবং মানবজাতির সংমিশ্রণ, যা ভবিষ্যতে মানুষের জীবনধারা ও ধ্যানধারণা পাল্টে দিতে পারে।