
প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে অসামাজিক কর্মকাণ্ড, আতঙ্কে এলাকাবাসী
বিশেষ সংবাদদাতা, শামসুন্নাহার সিএনআর : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চিটাগাং রোডসংলগ্ন হাইওয়ে এলাকায় অবস্থিত “ব্যাচেলার পয়েন্ট” নামের একটি আবাসিক হোটেলকে ঘিরে চলছে দেহ ও মাদক ব্যবসার রমরমা বাণিজ্য। অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় এই অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হোটেলটির আড়ালে বিভিন্ন পেশার নারী ও স্কুল–কলেজ পড়ুয়া তরুণীদের ব্যবহার করে দেহ ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সেখানে নিয়মিতভাবে মাদক সেবন ও বিক্রিও চলে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
তাদের দাবি, দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রতিদিন নতুন নতুন কাস্টমার সরবরাহ করা হয়। এসব দালালের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন বয়সী পুরুষ, এমনকি কলেজপড়ুয়া তরুণরাও। এলাকাবাসীর অভিযোগ—এই হোটেলটি এখন অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, হোটেলটির মালিক জাহিদ একসময় স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং অতীতে বিভিন্ন হোটেলে দেহ ব্যবসায়ীদের দালাল হিসেবে কাজ করতেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক প্রভাব ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তিনি নিজেই হোটেল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। জানা গেছে, ঢাকাসহ কুমিল্লা ও গাজীপুর এলাকাতেও তার হোটেল ব্যবসা রয়েছে। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলাতেও তার নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি গড়ে উঠেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, জাহিদ নিয়মিতভাবে প্রশাসনের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও মুখোশধারী স্থানীয় নেতাদের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে কোনো কার্যকর অভিযান পরিচালিত হচ্ছে না।
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, “আমরা আতঙ্কে আছি। এখানে দিনরাত অচেনা লোকজন আসা–যাওয়া করে। আমাদের সন্তানরা মাদকে জড়িয়ে পড়ছে, সমাজটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।”
প্রতিবেদক হোটেলটিতে সরেজমিনে গেলে হোটেলের মালিক জাহেদকে পাওয়া যায় নাই। তবে ম্যানেজার সিরাজ সব কিছু অস্বীকার করেন। মালিক জাহিদের সাথে কথা বলার কথা বললে ম্যানেজার বলেন, স্যার ত অসুস্থ। কারো ফোন ধরেন না।।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে।” তবে স্থানীয়রা দাবি করেছেন, বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে বার বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি বার বার লাইনটা কেটে দেন।।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি এলাকাবাসীর জোর দাবি—অবিলম্বে তদন্ত করে হোটেল “ব্যাচেলার পয়েন্ট”-এর অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।