হরিণাকুন্ডু প্রতিনিধি: ভারতের কলকাতা ও আকাশ টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ঝিনাইদহে দুই ভুয়া সাংবাদিক জনতার হাতে আটক হয়েছে। পরে তাদের হরিণাকুন্ডু থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আটককৃতরা হলেন, শৈলকুপা উপজেলার গোলকনগর গ্রামের জিয়ারত ডাক্তারের ছেলে লিটন মিয়া ও রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নড়িয়া গ্রামের ইসলাম মোল্লার মেয়ে আনোয়ারা পারভিন হ্যাপী। গতকাল বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার দুর্লভপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে। হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আসাদুজ্জামান মুন্সি জানান, গতকাল বুধবার লিটন মিয়া ও আনোয়ারা পারভিন হ্যাপী সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দুর্লভপুর সরকারী প্রাইমারি স্কুলে চাঁদাবাজি করতে যায়। গত ২৬ জুলাই এই দুইজন স্লিপ প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ১৫’শ টাকাও হাতিয়ে নেয়। এবিষয়ে বিভিন্ন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ দেন এনামুল হক। গতকাল জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে নিউজ কাভার করার জন্য কলকাতার টিভির পরিচয় দানকারী ভূয়া সাংবাদিক লিটনকে ফোন করে নিয়ে যায় যে, আমাদের অনুষ্ঠান আপনার টিভিতে প্রচার করবেন খরচ দেওয়া হবে । পূর্বেই প্রস্তুতি ছিল যে, গত ২৬ জুলাই প্রধান শিক্ষককে ভয় দেখিয়ে যে ১৫’শ টাকা নিয়েছিল, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার। গত বুধবার ফোন পেয়ে লিটন ও পারভীন শোক দিবসের সংবাদ কাভার করতে গেলে ফেসে যান। ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিগণ কলকাতার অফিসে ফোন দিয়ে জানতে পারেন যে, কলকাতার টিভিতে সে একসময় ছিলেন, বর্তমানে নেই। এবিষয়ে দৈনিক হক ইনসাফ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জীবন খানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন লিটন ও পারভীন নামে আমাদের কোন প্রতিনিধি নেই। অপরদিকে আকাশ নিউজ মিডিয়া ২৪ ডট কম অফিসে ফোন দিয়ে জানা যায়, পারভীন নামে কোন প্রতিনিধি নেই। ভূয়া সাংবাদিক লিটন ও পারভীন কম্পিউটার দোকান থেকে জালিয়াতি করে আইডি কার্ড তৈরি করেছে বলে শৈলকুপা উপজেলার নাসির জানান। আগে থেকেই শিক্ষকদের সন্দেহ ছিল যে তারা ভুয়া সাংবাদিক। তাই কৌশল করে ফোন দিয়ে স্কুলে ডেকে এনে সন্দেহ প্রমাণিত হলে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। দুর্লভপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক জানিয়েছেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তারা সাংবাদিক নয়, তারা মুলত কলকাতা ও আকাশ টিভির পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করতে করত। তাই তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছি। আটক আনোয়ারা পারভিন হ্যাপী পুলিশেকে জানিয়েছে, তার স্বামীর বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার বড় বোয়ালিয়া গ্রামে। স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। এ কারণে শৈলকুপার গোলকনগর গ্রামের লিটন মিয়ার সাথে ভাটই বাজারে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বসবাস করেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাঁদাবাজি করেন। এ ব্যাপারে গতকাল বুধবার দুপুরে হরিণাকুন্ডু থানায় ভুয়া সাংবাদিক লিটন ও হ্যাপীর নামে দুর্লভপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বাদী হয়ে মামলা করেন। উল্লেখ ইতঃপূর্বে হরিণাকুন্ডু উপজেলার চরপাড়া বাজারে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের ছেলে জিয়াউল হক, হরিণাকুন্ডুর হরিয়ারঘাট গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে শাওন হাসান আবীর ও কুষ্টিয়ার ইবি থানার বিষ্ণুদিয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে ওয়ালীউল্লাহ জনতার হাতে আটক হয়ে শ্রীঘরে ঢোকেন।