প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তারা মুখোমুখি হয়েছিলেন। একজন আরেকজনকে ঘায়েল করেছেন সে সময়। তারপর প্রায় এক বছর কেটে যাচ্ছে। এ সময়ে অনেকটা নীরবতা রক্ষা করেন ডেমোক্রেট দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতা নিয়ে পরাজিত হিলারি ক্লিনটন। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ও পরে অনেক বিষয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়ে নিজের বৃত্তে বন্দি ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। কিন্তু কয়েকদিন হলো আবার দু’জনকে একই রকম রাজনৈতিক আক্রমণের মঞ্চে দেখা যাচ্ছে। একজন আরেকজনকে আক্রমণ করে কথা বলছেন। নতুন করে শুরু হয়েছে তাদের বাকযুদ্ধ।
রোববার লন্ডনের সাউথব্যাংক সেন্টারে লন্ডন সাহিত্য উৎসবে বক্তব্য রাখেন হিলারি ক্লিনটন। এ সময় তিনি ট্রাম্পকে নিয়ে নিজের উদ্বেগ তুলে ধরেন। বলেন, যেকোনো সময় পারমাণবিক হামলা শুরু করে দিতে পারেন ট্রাম্প। নিজের কৃতিত্ব বাড়ানোর জন্য তিনি উত্তর কোরিয়া ও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে বসতে পারেন।
হিলারি আরো বলেছেন, এফবি আইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কমির কারণে তিনি গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরেছেন। তা না হলে এখন তিনিই থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
এসব কথা গোপন থাকে নি। সব চলে গেছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কানে। তাই তিনি টুইট করেছেন। হিলারিকে তাই আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি টুইটে লিখেছেন, সম্প্রতি আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আমি কি ২০২০ সালে ‘ক্রুকড’ হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে আবার নির্বাচনে যাচ্ছি কিনা? এ প্রশ্নে আমার জবাব হলো- আমি তো তাই আশা করি। ওদিকে গত সেপ্টেম্বরে সিবিএস টেলিভিশনকে একটি সাক্ষাতকার দেন হিলারি। তিনি তাতে বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় থাকবেন। তিনি বিশ্বাস করেন দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত স্থবির হয়ে আছে। এসব খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে আরো বলা হয়, ২০১৬ সালে হোয়াইট হাউজের দৌড়ে অংশ নিয়ে পরাজিত হন হিলারি। ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন লড়াইয়ে হেরে যান সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে। গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের পর তিনি বেশির ভাগ সময়ই ছিলেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তিনি জনসমক্ষে আসা ধরেছেন। লিখেছেন নতুন একটি বই। নাম তার ‘হোয়াট হ্যাপেন্ড’। এতে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে ট্রাম্প ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার চিন্তাভাবনা তুলে ধরেছেন। তার সাম্প্রতিক কর্মকাকা- ও বক্তব্য দেখে অনেকেই ধরে নিচ্ছেন তিনি ২০২০ সালের নির্বাচনে আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
এদিকে এ বছরের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, এমন আগুনে জবাব দেয়া হবে যা বিশ্ব কোনোদিন দেখেনি। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা সংস্থা উত্তর কোরিয়ার হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনও বর্তমানে এ ইস্যুতে দৃশ্যত অনড় অবস্থানে আছে। এ ছাড়া শুক্রবার তিনি ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করার ওপর জোর দেন। ইরানকে সার্টিফাই করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। তিনি বলেন, চুক্তির সব শর্ত মেনে চলছে ইরান এমনটা বলা যাবে না। তাই তিনি এ চুক্তি বাতিল করার ওপর জোর দেন।