প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি আক্রমণ করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল দেশের পনেরো-কুড়ি জন বন্ধু শিল্পপতির কালোটাকা সাদা করার জন্য। সেই বন্ধু শিল্পপতিরা যাঁরা টাকা দিয়ে মোদিকে সাহায্য করেছেন।
কংগ্রেস সভাপতি আজ বৃহস্পতিবার দলীয় দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে নোট বাতিল ও রাফায়েল যুদ্ধবিমান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ করেন। গতকাল বুধবারই রিজার্ভ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মোট বাতিল নোটের ৯৯ দশমিক ৩০ শতাংশই সরকারের ঘরে ফিরে এসেছে। রাহুল বলেন, এটা এখন স্পষ্ট, সাধারণ মানুষের পকেট কেটে মোদি তাঁর বিশেষ শিল্পপতি বন্ধুদের পকেট ভরেছেন। বন্ধু শিল্পপতিদের কালোটাকা সাদা করিয়েছেন।
রাহুল বলেন, মোদির এই সিদ্ধান্ত মোটেই ভুল কিছু ছিল না। তাই তাঁর ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নও ওঠে না। তিনি যা করেছেন, তা ভাবনাচিন্তা করেই করেছেন। সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। রাহুল এই প্রসঙ্গে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর নাম করে বলেন, উনি গুজরাটের যে সমবায় ব্যাংকের কর্তা, সেই ব্যাংক নোট বাতিলের প্রথম কয়েক দিনের মধ্যেই ৭০০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। রাহুল বলেন, সাধারণ খেটে খাওয়া লোকজন, ছোট-মাঝারি দোকানদার এবং শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষের ক্ষতি করে মোদি তাঁর বড়লোক শিল্প উদ্যোগী বন্ধুদের সাহায্য করেছেন। নোট বাতিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল এই।
নোট বাতিলের যুক্তি হিসেবে মোদি বলেছিলেন—১. এতে কালোটাকা ধরা যাবে এবং ২. জাল নোটের রমরমা কমবে, যেহেতু নতুন নোট জাল করা কঠিনই নয়, অসম্ভব। ৩. ক্যাশলেস অর্থনীতির প্রবণতা বাড়বে। গত বুধবার ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাতিল হওয়া নোটের ৯৯ দশমিক ৩০ শতাংশই ফেরত এসেছে। এতে সরকারের খরচ হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। এর ফলে প্রমাণিত, নোট বাতিলের যে যুক্তিগুলো মোদি দেখিয়েছিলেন, সেগুলোর একটাও সফল হয়নি। এর উল্লেখ করে রাহুল বৃহস্পতিবার বলেন, নোট বাতিল বিরাট মাপের দুর্নীতি ছাড়া অন্য কিছু নয়। তিনি বলেন, লোকে ভুল করলে তার জন্য ক্ষমা চায়। মোদি কোনো ভুল করেননি। অনেক ভেবেচিন্তে বড়লোক বন্ধুদের সুবিধা করে দিয়েছেন।
নোট বাতিলের সঙ্গে রাহুল তুলে ধরেন রাফায়েল বিতর্কও। এ ক্ষেত্রেও তিনি মোদির শিল্পপতি বন্ধুদের প্রসঙ্গ তোলেন। শিল্পপতি অনিল আম্বানির নাম করে তিনি বলেন, বেশি দাম দিয়ে রাফায়েল কেনার উদ্দেশ্যও বন্ধু শিল্পপতিদের সাহায্য করা।
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অনিল আম্বানির করা মানহানির মামলা সম্পর্কে মন্তব্য করে রাহুল বলেন, যত খুশি মামলা তিনি করতে পারেন। কিন্তু তাতে সত্যের পরিবর্তন ঘটবে না। দেশ জানতে চায় মোদির সঙ্গে অনিল আম্বানিদের কী বোঝাপড়া বা চুক্তি হয়েছে।