নরসিংদীর রায়পুরায় স্বামী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এতে আহত গৃহবধূ ফেরদৌসী বেগমকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের বটিয়ারা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় গতকাল দুপুরে নির্যাতিত গৃহবধূ ফেরদৌসী বেগম বাদী হয়ে স্বামী আঙ্গুর মিয়া ও শাশুড়ি সামসুন নাহারের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
পুলিশ ও নির্যাতিত গৃহবধূর স্বজনরা জানায়, ২০০৩ সালে রায়পুরা উপজেলার মরজাল গ্রামের জব্বার খানের প্রতিবন্ধী মেয়ে ফেরদৌসী বেগমের সঙ্গে একই উপজেলার বটিয়ারা গ্রামের মরফত আলীর ছেলে আঙ্গুর মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের প্রথম ৩ বছর তাদের দাম্পত্য জীবন ভালভাবে কাটলেও পরে শুরু হয় স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতন। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার দুই পরিবারের মধ্যে সালিশ-দরবার হলেও পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়নি। গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনে গৃহবধূ ফেরদৌসী অচেতন হয়ে যায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাবার বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার পর গত শুক্রবার রাতে স্বামী গিয়ে পূর্বের ন্যায় আর নির্যাতন করবে না মর্মে অঙ্গীকার করে স্ত্রী-সন্তানকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু রাত না কাটতেই শনিবার সকালেই স্ত্রী ফেরদৌসীকে মারপিট করে রক্তাক্ত আহত করে স্বামী। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।
নরসিংদী জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শওকত হাসান খান বলেন, আঘাতের কারণে ফেরদৌসীর নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। মুখ ফুলে গেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত প্রতিবন্ধী গৃহবধূ ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘প্রতিবন্ধী হওয়ায় নানা ছলছাতুরিতে স্বামী-শাশুড়ি আমাকে মারছে।’ কিন্তু সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে ১০ বছর যাবৎ আমি সব সহ্য করছি। কিন্তু কোনো ভাবেই আমাকে বাড়ি থেকে বের করতে না পেরে তারা আমাকে মারপিট করে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। আমি সন্তানদের নিয়ে বাঁচতে চাই। আপনারা আমাকে বাঁচান।
এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত স্বামী আঙ্গুর মিয়ার মোবাইলে একাধিকবার কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক। নির্যাতিত প্রতিবন্ধী গৃহবধূ থানায় অভিযোগ করার পরই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।