বিনোদন ডেস্ক : ডাকোটা জনসন, হলিউডের প্রখ্যাত অভিনেত্রী। ‘ফিফটি শেডস অব গ্রে’, ‘ব্ল্যাক মেস’, ‘সাসপিরিয়া’ সিনেমাগুলো অভিনয় জগতে তাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। এবার তিনি নামছেন পরিচালনায়। তার প্রথম সিনেমা তৈরি হবে একজন অটিস্টিক অভিনেত্রীর চিত্রনাট্যের উপর ভিত্তি করে, যার সঙ্গে তিনি একটি সিনেমায় অভিনয়ও করেছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে ডাকোটা বলেছেন, পরিচালনার ক্ষেত্রে নিজের সেটকে কখনোই বিষাক্ত হতে দেবেন না। নারী-কেন্দ্রিক গল্প বলতে চান তিনি। পাশাপাশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাকশন চরিত্রেও অভিনয় করতে পছন্দ করেন অভিনেত্রী। চেক প্রজাতন্ত্রে কার্লোভি ভ্যারি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’র ৫৯তম সংস্করণে সাংবাদিকদের এক গোলটেবিল বৈঠকে জনসনকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি অভিনয় এবং প্রযোজনার বাইরে গিয়ে পরিচালনায় আসবেন কিনা। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘শিগগিরই একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা পরিচালনা করব।
কাজও অনেকটা এগিয়ে নিয়েছি। চিত্রনাট্য করছেন আমার খুব পছন্দের একজন মানুষ, ভেনেসা বার্গহার্ট। একটি সিনেমায় আমার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তিনি একজন অবিশ্বাস্য অটিস্টিক অভিনেত্রী।’ তবে পরিচালনায় কিন্তু ডাকোটার এটাই প্রথম প্রজেক্ট নয়। পরিচালক হিসেবে জনসন ইতিমধ্যেই কোল্ডপ্লে মিউজিক ভিডিও ‘ক্রাই ক্রাই ক্রাই’ এবং শর্টফিল্ম ‘লুজার বেবি’ তৈরি করেছেন। তবে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা বানানো নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় ছিলেন। কারণ একসময় তিনি মনে করতেন, এতো বড় কিছু তাকে দিয়ে হবে না। অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি সবসময় অনুভব করেছি যে, আমি কোনও পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা পরিচালনা করতে প্রস্তুত নই। আমার আত্মবিশ্বাস নেই। এরপরপরই নিজেকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছি। মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। কেন পারবো না? এই প্রশ্নটি নিজেকে বারবার করেছি। শেষ পর্যন্ত উত্তর এসেছে, আমিও পারবো। গল্প যখন পেয়েছি, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি আমি অন্য কাউকে এটি করতে দেব না।’ তবে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা বানালেও সেখানে কোনো যৌন উত্তেজক কিছু থাকবে না বলেও আগাম জানিয়ে দেন ডাকোটা। তিনি বলেন, ‘আবেগি বিষয়গুলো থাকবে, কিন্তু কোনো যৌন সুড়সুড়ি নয়। আমি উষ্ণতার মাধ্যমে কিছু বলতে বা দেখাতে চাই না। আমার সিনেমায় অনেকগুলো নারীচরিত্র আছে। বলা যেতে পারে এটি একটি নারীকেন্দ্রিক সিনেমা। যেখানে নারীদের দর্শক সাধারণত যেভাবে দেখেন তার থেকে আলাদা, জটিল এবং সূত্র হিসেবে দেখা যাবে।’ শুরুতে অভিনেত্রী বলেছিলেন, নিজের সিনেমার সেটকে বিষাক্ত হতে দেবেন না। কেন বলেছেন? ব্যাখ্যা দিয়েছেন জনসন। তার পরিবার বংশপরম্পরায় অভিনয়কেন্দ্রিক। তাই তিনিও সিনেমায় অভিনয়ে নাম লেখান ছোটবেলা থেকেই। সেই অল্পবয়সেই দেখেছেন, সেটে লোকেরা কীভাবে আচরণ করে। তখন থেকেই সেটে বা তার বাইরে সমস্যা দেখা দিলে তিনি বেশ প্রতিবাদ করতেন। যেটা এখনও চালু রয়েছে। তবে পুর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার পরিচালক হিসাবে আ্তপ্রকাশের অপেক্ষায় থাকলেও প্রযোজক হিসাবে কিন্তু অনেক আগেই নাম লিখিয়েছেন ডাকোটা। নিজের প্রযোজনা সংস্থা টি-টাইম পিকচার্স থেকেই নতুন সিনেমা বানাবেন তিনি। ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রোমান্টিক কমেডি ‘স্প্লিটসভিল’ তার প্রযোজনা সংস্থা থেকেই নির্মিত হয়েছিল।
এদিকে পরিচালনায় নামলেও অভিনয়ের ক্ষুধা এখনও বিদ্যমান অভিনেত্রীর মধ্যে। কোন ধরণের চরিত্রের প্রতি এখনও দার দূবলতা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন কিছু চরিত্র আছে যা আমি স্বপ্ন দেখি। যেমন, আমি একজন সাইকোপ্যাথের চরিত্রে অভিনয় করতে ভালোবাসি, অ্যাকশন সিনেমাতে কাজ করতে ভালোবাসি।’ উল্লেখ্য, জনসন মাত্র ১০ বছর বয়সে অ্যান্টোনিও ব্যান্ডেরাসের ১৯৯৯ সালের সিনেমা ‘ক্রেজি ইন আলাবামা’-তে অভিনয়ের মাধ্যমে সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। ২০১০ সালে, তিনি ডেভিড ফিঞ্চারের ‘দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক’-এ হাজির হয়ে বেশ চমক দেখান। তার সম্প্রতিক আলোচিত কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ম্যাগি গিলেনহালের ‘দ্য লস্ট ডটার’ (২০২১) এবং ক্যারি ক্র্যাকনেলের ‘পারসুয়েশন’ (২০২২)। শিগগিরই তিনি মাইকেল শোয়াল্টার পরিচালিত রোমান্স থ্রিলার ‘ভেরিটি’তে অ্যান হ্যাথওয়ে এবং জশ হার্টনেটের বিপরীতে অভিনয় করবেন।