ঢাকা পর্যন্ত পণ্যবাহী কন্টেইনার ট্রেন চলাচলের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ভারতের রেল বোর্ড। পরিবহন খরচ কমিয়ে আনার দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগের অংশ এটি। পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি কম হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেল বোর্ড। এক্ষেত্রে যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে ভারবাহী কন্টেইনার চলাচল অনুমোদিত নয়। তবে মাওয়া ঘাটে একবার পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে তা ব্যবহার করতে চায় ভারত। দ্য হিন্দুর বিজনেস লাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, ভারতীয় পণ্যের নবম সর্বোচ্চ আমদানিকারক বাংলাদেশ। তবে গত তিন বছর ধরে এই রপ্তানি অনেকটা পড়ে গেছে। ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন থেকে প্রকাশিত বাণিজ্যিক তথ্য মতে, ২০১৩-১৪ সালে বাংলাদেশে ভারতীয় রপ্তানি পৌঁছেছে ৬০০ কোটি ডলার। আগের বছরে এর পরিমাণ ছিল ৪৭৭ কোটি ডলার। তা থেকে অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতীয় রপ্তানি। তবে ২০১৪-১৫ এবং ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে এই রপ্তানি করেছে। যথাক্রমে এর পরিমাণ ৫৮০ কোটি ডলার ও ৫৪০ কোটি ডলার। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩০ কোটি ডলার। আবার ভারতে বাংলাদেশও রপ্তানি করে। তবে তুলনায় তা অনেক কম। ২০১৩-১৪ ও ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে তা ৪৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি ৯০ লাখ ডলারে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে বাণিজ্য হয় তার বেশির ভাগই সড়কপথে। এক্ষেত্রে কন্টেইনারে কোনো পণ্য যায় না। দু’দেশের মধ্যে যানবাহন চলাচলেও কিছু বিধিনিষেধ আছে। বাংলাদেশে বর্ধিত সড়কেও বিধিনিষেধ আছে। এর ফলে মালামাল গাড়িতে তোলা ও সীমান্তে তা নামানো করা হয় জনবল ব্যবহার করে। এতে যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাণিজ্য খরচও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পেট্টাপোল-বেনাপোল সীমান্তে গড়ে এক কোটি রুপির একটি চালানে শতকরা দুই ভাগ খরচ হয় যানজটের কারণে। এক্ষেত্রে খরচ কমানোর ক্ষেত্রে আদর্শ সমাধান হলো রেল পথ। দুই দেশের মধ্যে সচল তিনটি রেল সংযোগ আছে। গেদে-দর্শনা লাইনের মাধ্যমে কলকাতা থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলাচল করে যাত্রীবাহী রেল। তবে যমুনা সেতুতে ভার বহনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ জন্য বর্তমানে পণ্যবাহী রেল চলাচল স্থবির হয়ে আছে। তবে নতুন পদ্মা সেতু সচল হলে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে ধারণা করা হয। তবে রেল চলাচলের অবকাঠামো স্থাপনে দীর্ঘ সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে পুরো ভার না নিয়ে তার চেয়ে কম পণ্য নিয়ে কন্টেইনারবাহী রেল চলাচলের কারিগরি উপযোগিতা নিয়ে কাজ করছে ভারত ও বাংলাদেশ।