বাতাস থেকে পানি ধরার সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি করেছেন গবেষকরা। এর ফলে জলশূন্য এলাকার মানুষদের দুর্ভোগ লাঘবের আশা করা হচ্ছে।
পানির অভাব নেই যেসব দেশে তার একটি বাংলাদেশের কিছু এলাকার জন্যও এই আবিষ্কার আশীর্বাদ হতে পারে। কারণ, পানি থাকলেও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে পানযোগ্য মিষ্টি পানির অভাব রয়েছে। আবার পাহাড়ি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বর্ষা ছাড়া বাকি সময়ে পানির সংকট দেখা দেয়।
বাংলাদেশে চল না থাকলেও বিভিন্ন প্রতিবেদন বলছে বাতাস থেকে পানি ধরার চল নতুন নয়। আধুনিক যুগের অনেক আগে থেকেই শুকনো এলাকায় পানির উৎস হিসেবে ব্যবহার হতো বাতাস।
আন্দিজ পর্বত থেকে শুরু করে সাহারা মরুভূমি পর্যন্ত পানি শুন্য এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী বানিয়ে বিশেষ ধরণের এক জাল দিয়ে বাতাস আটকে পানি উৎপন্ন করা হতো।
পানি জমানোর জন্য উৎপাদকরা ধোঁয়া বানিয়ে গরম বাতাসের বিপরীতে দাড়িয়ে বিন্দু বিন্দু পরিমাণ পানি সংগ্রহ করত। উৎপাদকরা অনেক সময় অতিরিক্ত পানি বিভিন্ন পানিশূন্য এলাকায় বিতরণ করত।
কিন্তু পানি উৎপাদনের এই প্রক্রিয়া ছিলো কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ। তবে ১৯৮০ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পানি উৎপাদক এই জাল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
সম্প্রতি পুরনো সেই পদ্ধতিকে পাল্টে দিয়ে নতুন ও সহজ একটি উপায় উদ্ভাবন করেছে ভার্জিনিয়ার টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি।
তাদের বানানো পানি উৎপাদন যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছে সাধারণ বাতাস ধরা জালের থেকে তিনগুণ বেশি কার্যকর জাল।
জালটিকে নাম দেয়া হয়েছে ‘হারপ বা বীণা’। এই জালে ব্যবহৃত তারগুলো বাদ্যযন্ত্রের ন্যায় দেখতে বলেই এই নাম দিয়েছেন গবেষকরা। পুরো যন্ত্রটির নাম রাখা হয়েছে ‘ফগ হারপ’ বা ‘ধূম্র বীণা’।
যন্ত্রটি সম্পর্কে ইমেইল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক জনাথন বরেকো বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো পানি উৎপাদনে পুরনো জাল সরিয়ে ‘ফগ হারপ’ এর প্রচলন শুরু করা। এতে করে খুব সস্তায় ও অল্প সময়ে অনেকটা পানি উৎপন্ন হবে।’
নতুন এই যন্ত্রটির ডিজাইন সম্পর্কে জনাথন জানান, এটির জাল লম্বালম্বিভাবে রাখা হয়েছে পানির বিন্দুগুলো সহজে নিচে নামার জন্যে। এর ফলে সাধারণের তুলনায় তিন গুণ বেশি পানি উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে নতুন ‘ফগ হারপ’।
যন্ত্রটি বাজারে আসার বিষয়ে জনাথন কিছু না জানালেও পানিশূন্য এলাকায় এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে আশাবাদী তিনি।