বাংলা চলচ্চিত্রের একজন কিংবদন্তী অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদী। খল-অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি পেলেও তার জনপ্রিয়তা ছিল অনেক নায়ক-নায়িকাদের থেকেও বেশি। যার অভিনয় ছিল নজরকাড়া। শুটিং সেটে ছবির মূল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের তুলনায় দর্শকেরা হুমায়ুন ফরিদীর দিকেই বেশি আকর্ষিত হতেন বলে প্রচলিত আছে। শুধু চলচ্চিত্র নয়, মঞ্চ ও টিভিতে অভিনয় করেও তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।
আজ সেই কিংবদন্তী অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর জন্মদিন। ১৯৫২ সালের এই দিনে ঢাকার নারিন্দায় জন্মেছিলেন তিনি। শুভ জন্মদিন কিংবদন্তী। স্বাভাবিকভাবেই জন্মদিনটা যে কারো জন্যই একটা বিশেষ খুশির দিন। কিন্তু বিশেষ এ দিনেও দুঃখ ভারাক্রান্ত দেশের লাখো ফরিদীভক্ত।
বহু প্রতিভাধর এই অভিনেতাকে মনে করে আজ হয়তো দেশের বিভিন্ন জায়গায় জন্মদিনের কেক কাটা হবে। কিন্তু সেই কেক কাটতে হবে বিমর্ষ মনে। কেননা, যার স্মরণে কেক কাটবেন ভক্ত-শুভাকাঙ্খীরা, তিনিই তো নেই পৃথিবীতে। কেকে তো সেই মানুষটার হাতের ছোঁয়াই থাকবে না।
হুমায়ুন ফরিদী চলচ্চিত্রে এসেছিলেন ১৯৯০ সালে। এর আগে তিনি বিভিন্ন মঞ্চ, থিয়েটার ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন। এ সকল জায়গায় খ্যাতি পাওয়া ফরিদী চলচ্চিত্রেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বাংলাদেশের নাট্য ও চলচ্চিত্র জগতে অসাধারণ ও অবিসংবাদিত চরিত্রে অভিনয়ের জন্যই তিনি চির স্মরণীয় হয়ে আছেন।
অভিনয় জীবনে হুমায়ুন ফরিদী একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০১০ সালে তাকে সম্মাননা দেয়া হয়। কারণ তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র ছিলেন এবং ১৯৭৬ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টির নাট্য উৎসবের অন্যতম সংগঠকও। চলতি বছরে আবার নৃত্যকলা ও অভিনয় শিল্পের জন্য একুশে পদকও (মরণোত্তর) লাভ করেছেন ফরিদী।
ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ুন ফরিদী দুইবার বিয়ে করেন। প্রথম বিয়ে করেন ১৯৮০ সালে। দেবযানী নামে এক মেয়ে রয়েছে সেই সংসারে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর খ্যাতনামা অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাকে বিয়ে করেন ফরিদী। ২০০৮ সালে সুবর্ণার সঙ্গেও বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়। চার বছর নিঃসঙ্গ থেকে ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে চলে যান দেশসেরা এ অভিনেতা।