মতলব উত্তর উপজেলার ৬নং কলাকান্দা ইউনিয়নের উত্তর মিলারচর গ্রামের মোহাম্মদ হোসেনের ছেলের সাথে একই গ্রামের আবুল কালামের নাবালিকা মেয়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়, এই সংবাদ কলাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছোবাহান সরকার (সুভা) পেয়ে ছেলে ও মেয়েকে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার করে। কলাকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান ছোবহান সরকার সুভা’র দুর্দশিতায় বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল দু’ স্কুল শিক্ষার্থী।
ছেলে ও মেয়ে উভয়কে জিজ্ঞাসা বাদ করলে তারা দুজনেই বলে বিয়ে করবে, কিন্তু দুজনের কারোই বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়ার কারণে বিপাকে পড়ে যান। মেয়ের জন্ম তারিখ ০৪.০৩.২০০৪ইং। ছেলের জন্ম তারিখ ১২.০২.২০০০ইং। প্রেমিক ১০ম শ্রেনীর ও প্রেমিকা ৯ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত নীলনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে।
দুই জনের কারোই বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে তাৎক্ষণিক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারকে অবহিত করেন। উপজেলা মতলব উত্তর ইউএনও শারমিন আক্তারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক উভয় অভিভাবক ও ছেলে-মেয়েকে ইউএনও কার্যালয়ে হাজির করেন।
ইউএনও শারমিন আক্তার উভয় অভিভাবকের কাছ থেকে লিখিত রেখে ছেলে ও মেয়েকে অভিভাবকদের জিম্মা দেন।
ইউপি সদস্য মাহফুজ সরকার বলেন, আগামী প্রজন্মের সুস্থভাবে বেড়ে উঠা এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে বাল্যবিবাহ একটি বড় বাঁধা। বাল্যবিবাহসহ সামাজিক অপরাধগুলো রোধ করতে হলে আমাদের সকলকে যে যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনে শরিক হতে হবে।
কলাকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান ছোবহান সরকার সুভা বলেন, নিরাপত্তাহীনতা ও অভাব অনটনের কারণে বাল্যবিবাহ হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ভাল পাত্র পেলে বাল্যবিয়ে দেয়া হয়। মোবাইলের অপব্যবহারের কারণেও অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ে দেয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, বাল্যবিবাহ থেকে উত্তোরনের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি সরকার থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম পযর্šÍ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। অনেক বাবা-মা মেয়েকে বোঝা মনে করে। তাদেরকে সচেতন করতে হবে। বাংলাদেশে শৈশব থেকেই ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অযাচিত দুরত্ব সৃষ্টির একটা প্রবণতা রয়েছে, যা তাদের বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বিকাশে বড় বাধা। তিনি আরও বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ বিধান প্রসঙ্গে সভা-সেমিনার হলেও জোরালো কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি, যা অনেকের কাছে বিষ্ময়কর।